প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম (ভিজিট : ৫৯৬)
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :

এক সময় কাঠের ফার্নিচারের কদর থাকলেও বাজারে বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের প্রভাবে স্থানীয় ফার্নিচার ব্যবসায় মান্দা ভাব দেখা দিয়েছে। নিত্য নতুন ডিজাইন আর চকচকে রঙের আঁচড়ে মানুষের নজর কাড়ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আসবাবপত্র। কিন্তু সময়ের দাবিতে ব্যতিক্রম মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বড়চেগ গ্রামের আমির হোসেন সিরাজ। তিনি নিজ গ্রামে গড়ে তুলেছেন বাঁশ-বেতের আধুনিক ফার্নিচারের কারখানা। বড় বড় স্থানীয় ফার্নিচারের দোকান যখন ব্র্যান্ডের ফার্নিচারের কাছে হার মানছে তখন গ্রাম থেকেই তিনি সারা দেশে বিক্রি করছেন তার তৈরি বাঁশ-বেতের ফার্নিচার। ২০০৩ সালে ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে মাত্র একজন শ্রমিক দিয়ে শুরু কারখানা শুরু করেন সিরাজ। এখন সেখানে কাজ করেন ১৫ জন শ্রমিক। নাম দিয়েছেন ‘সিরাজ কুটির শিল্প’। তার এই ফার্নিচার সারাদেশে যেমন যাচ্ছে তেমনি সারা দেশে তার পরিচিতিও এনে দিয়েছে। করোনার কারণে গত বছর থেকে ব্যবসা একটু খারাপ যাচ্ছে তবে স্বাভাবিক সময়ে এত অগ্রীম অর্ডার থাকে যে দিনরাত শ্রমিকদের কাজ করতে হয়। বছরে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকার ফার্নিচার বিক্রি করেন তিনি। নিজ উদ্যোগ এবং সাফল্য নিয়ে আমির হোসেন সিরাজ জানান, এক সময় মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে কর্মচারীদের বেতনসহ আনুসাঙ্গিক খরচ প্রতি মাসে প্রায় দেড় লাখ টাকা। যেখানে দেড় লাখ টাকা মাসে খরচ হচ্ছে নিশ্চয়ই আমার আয়ও সেভাবেই হচ্ছে যেটা উল্লেখ করতে চাচ্ছি না। তিনি বলেন, আমি নার্সারির ব্যবসা করতাম, কিন্তু ১৯৯৮ সালে আমার ধারণা হলো নিজের ঘরের জন্য বাঁশ-বেত দিয়ে কিছু ফার্নিচার তৈরি করব। যখন তৈরি করলাম অনেকেই নিতে চাইলেন। আস্তে আস্তে বাড়িতে শুরু করলাম এবং সামান্য লাভে বিক্রি করতাম। পরে চিন্তা করলাম বাণিজ্যিকভাবে শুরু করি। এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কুরিয়ারের মাধ্যমে গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে যায় আমার ফার্নিচার। অনেকেই আমার কাছ থেকে নিয়ে অনলাইনে বিক্রি করেন। কেউ কেউ আবার বিদেশেও পাঠান। বিদেশে এর প্রচুর চাহিদা আছে। একজন কাতার প্রবাসী আমার থেকে প্রচুর মাল নেন যেগুলো তিনি কাতারে বিক্রি করেন। মোটামুটি সব ধরনের জিনিস এখানে তৈরি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, বাঁশের তৈরি আধুনিক ডিজাইনের খাট, ডাইনিং টেবিল, চেয়ার, ফুলের টব, সোফাসেট, রিডিং টেবিল, টেবিল ল্যাম্প, হোটেল-রেস্টুরেন্ট-অফিসের ফার্নিচারসহ বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্রের চাহিদা বেশি।