বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, এরা বাংলাদেশের আত্মাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে বিচার বিভাগকের স্বাধীনতা নেই। যারা বিচারক তারাই এই স্বাধীনতাকে ধ্বংস করছে। আজকে বিচারকরাই ন্যায় বিচার ধ্বংস করছে। বাংলাদেশের আত্মাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা যে আত্মাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি, কাজ করেছি লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি । সেই আত্মা আজকে বিনষ্ট করে দিয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমার লজ্জা পাই যখন টেলিভিশনে দেখি, তাদের কয়েকজন প্রথিতযশা সম্পাদক এবং সাংবাদিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকতা যখন ভয়াবহ অত্যাচার, নির্যাতন, গণতন্ত্র হত্যাকারী এই সরকারকে সর্মথন করে বক্তব্য দিচ্ছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘উষার দুয়ারে হানি আঘাত, আমরা আনিব রাঙা প্রভাত’ স্লোগানকে সামনে রেখে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে একটার পর একটা মামলা দিয়ে তাদেরকে প্রতিহত করে রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৪ জন নিহত হয়েছেন। সাগর-রুনীর মামলার একশো বার পেছানো হয়েছে এখন পর্যন্ত তদন্ত রির্পোট দিতে পারেনি। আলোকচিত্রি শহিদুল রহমানকে শুধুমাত্র ছবি তোলার দায়ে তাকে অন্যায় ভাবে নিপিড়ন করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের গুম করে আবার সাত আট মাস পরে আবার তাদেকে ফেরত দেয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে এমন একটা অবস্থা যেখানে এখন ফ্যাসিবাদ এতো সফল হয়েছে, যে সাংবাদিকদের সেলফ সেন্সরশীপ করতে হচ্ছে। এরপর রয়েছে মালিকের ব্যাপার। প্রতিটি মালিক জড়িত এই ভয়াবহ সরকারের বদন্যতার ওপরে ব্যবসা করে। এটা সত্যিকার অর্থে ভয়াবহ গুরুতর একটা অবস্থা। এই অবস্থার সাথে কখনই আমাদের অভিজ্ঞতা ছিলো না।
তিনি বলেন, আমাদের কথা বাদ দেন। আমরা তো রাস্তার কর্মী। মৃতুদণ্ড অল পলিটিক্যাল এক্টিভিটস। গণতন্ত্রে যাবতজীবন কারাদণ্ড। জুডিসিয়াল কিলিং করেছে। সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও শফিক রেহমানকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা দল থেকে বলেছি এখন জাতীয় ঐক্য দরকার। সমগ্র মানুষগুলোকে এক হতে হবে। আজকে গণমাধ্যমও ভাগ হয়েছে। এদিকে রয়েছেন ভয়াবহ সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী, আরেকদিকে রয়েছেন গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা ফিরে পাবার সংগ্রামে। যারা সংগ্রাম আছেন তারা আজ নিগৃহীত। তাদের অনেকের আজ চাকরি নেই, সত্য বলার অপরাধে অনেক গণমাধ্যম আজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, কয়েকদিন ঈশ্বরগঞ্জে ৩০ বছর আগের মামলায় ৯ জনকে মৃত্যুদ্বন্ড দেওয়া হয়েছে। সাবেক এমপি হাবিবকে ৭০ বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। সারাদেশে বিচারের নামে চলছে অবিচার। আর এ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতিকে রক্ষা করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন, তারেক রহমান নির্বাসিত থেকেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সবাই মিলে আসুন এই দানবীয় সরকারকে বিদায় করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করি।
ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সাধারণ খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপির সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, কামাল উদ্দিন সবুজ, এম. আব্দুল্লাহ, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, নুরুল আমিন রোকন, কবি আব্দুল হাই সিকদার, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, মুরসালিন নোমানী, এলাহি নেওয়াজ খান সাজু, এম এ আজিজ, রাশেদুল হক, সাঈদ খান প্রমুখ।