প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৭:৫৪ PM
লক্ষ্মীপুরে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী রাশেদা বেগম (২২) ও শ্বশুর মো. বাদশা মিয়াকে (৫০) নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় অভিযুক্ত মো. জাকির হোসেন সুমনকে আটক করছে পুলিশ।
বৃহস্প্রতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টাকার দিকে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যন্ড অপস্) মো. হাসান মোস্তফা স্বপন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন। এর-আগে ভোররাতে কমলনগর উপজেলার করুনানগর একালা থেকে অভিযান চালিয়ে ঘাতক সুমনকে আটক করা হয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডের (অস্ত্র) সরঞ্জাম গুলো একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য: বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা রামগতির উপজেলার চর বাদাম ইউনিয়নের পূর্ব চর কলা কোপা গ্রামে স্ত্রী রাশেদা ,শ্বশুর বাদশা মিয়া ও শ্বাশুড়ি আঙ্কুরীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় ঘাতক সুমন। ঘটনাস্থলেই মারা যায় স্ত্রী ও শ্বশুর। মুমূর্ষু অবস্থা শ্বাশুড়িকে নেওয়া হয় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে, তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিহত বাদশা মিয়া চরকলা কোপা গ্রামের মৃত তোবারক আলীর ছেলে পেশায় ইট ভাটার শ্রমিক ও ৪ ছেলে ১ কন্যা সন্তানের বাবা ছিলেন। আটক ঘাতক সুমন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়নের (৪নং ওয়ার্ড) পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন- জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যন্ড অপস্) মো. হাসান মোস্তফা স্বপন, কমলনগর-রামগতি সার্কেল সাইফুল আলম চৌধুরী, রামগতি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে সুমনের সঙ্গে রামগতি উপজেলার চর কলা কোপা গ্রামের বাদশা মিয়ার মেয়ে রাশেদার সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে জাহিদ নামে ৩ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তারা চট্টগ্রামে বসবাস করতো। বিয়ের পর থেকেই সুমন তার স্ত্রী রাশেদাকে মারধর করতো। তাই রাশেদাকে তার বাবা-মা নিজেদের বাড়িতে নিয়ে চলে আসেন। ২০ দিন পূর্বে রাশেদার মা-বাবা তাকে নোয়াখালী সদরের আন্ডারচর এলাকার আব্দুল কাদের নামে এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেন। তবে সুমন তার স্ত্রীর বিয়ের বিষয়টি জানতেন না। বুধবার সন্ধ্যায় সুমন তার স্ত্রীকে নিতে আসলে বিয়ের বিষয়টি জানতে পারেন। পরে এসব নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী রাশেদা, শ্বশুর বাদশা ও শাশুড়ি আঙ্কুরী বেগমকে কুপিয়ে সুমন পালিয়ে যান। এ সময় ঘটনাস্থলেই রাশেদা ও তার বাবা বাদশা মারা যান। আহত অবস্থায় আঙ্কুরীকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম অ্যন্ড অপস্) মো. হাসান মোস্তফা স্বপন আরও বলেন, স্ত্রী-শ্বশুরকে হত্যার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক ছিলো। পুলিশের তৎপরতার কারণে, সেই জেলার বাহিরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই ভোররাতের মধ্যে অভিযান চালিয়ে কমলনগর উপজেলার করুণানগর বাজার এলাকায় থেকে ঘাতক সুমনকে আটক করতে পুলিশ সক্ষম হয়।