প্রকাশ: রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৫:৩২ PM
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ডেঙ্গুর লার্ভার বিস্তার যত্রতত্র দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি বৃদ্ধ পাচ্ছে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গড়ে শতকরা ৬৩ জন রোগিকে ডেঙ্গু চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়াতে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেঝেসহ বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। চাহিদা অনুযায়ী নেই পর্যপ্ত স্যালাইন ও ঔষধ্। হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তার-নার্সদের। আজ রবিবার ১৩জন রোগি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আজ রবিবার তেরজন ডেঙ্গু রোগি হাসপাতালে ভর্তি হয়। মঠবাড়িয়ায় পঞ্চাশ শয্যার হাসপাতালে গড়ে শতকরা ৬৩ জন ডেঙ্গু রোগি ভর্তি রয়েছে। হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোতে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় নির্ধারিত ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। অতিরিক্ত রোগীদের হাসপাতালের বারান্দা এবং করিডোরের মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এপর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই জনের। পুরানো হাসপাতাল এলাকায় বালু ভরাটের কারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ হওয়া ও লোকবল না থাকায় ময়লা আবর্জনা নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা যাচ্ছেনা।
ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত সুফিয়া অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ঔষধ নেই। যদিও তারা প্রয়োজনীয় এক প্রকার ঔষধ দেয় অন্য ওষুধ বাজার থেকে কিনতে হয় আমাদের । ডেঙ্গু রোগি মোঃ জাকারিয়া জানান , হাসপাতালে বিল্ডিং এর চার পাশের ড্রেন, বারান্দার দু’পাশ থেকে ড্রেনের দুর্গন্ধসহ মশা-মাছির উপদ্রবে অতিষ্ঠ রোগীরা। বারান্দায় এবং মেঝেতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারা।
পৌর শহরের বাসিন্দা অবসর প্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক ইখতিয়ার হোসেন পান্ন বলেন, পৌর শহরের অলিগলির ড্রেন ও ডোবা চলতি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধ হয়ে এডিসের লার্ভায় ভরে গেছে। এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু জীবাণুবাহী মশা নিধনের জন্য পৌর সভার কোন উদ্যোগ না থাকায় জনমনে ভীতি বিরাজ করছে।
পৌর সভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা গোবিন্দ কুন্ডু বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরুর পর থেকে স্থানীয় পর্যায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন প্রতিষ্ঠান এখোন পর্যন্ত ডেঙ্গুর লার্ভা নিধনে কোন ওষুধ ছিটানোর উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফেরদৌস ইসলাম প্রিন্স বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক গুন বেশি। তিনি আরও বলেন, এডিস মশা সকালে বিকেলে কামড়ায় এবং তাদের পূর্বের চরিত্র পরিবর্তন করে ফেলেছে । ডোবা নালার জলাবদ্ধ স্থানে এডিসের বংশ বিস্তার হচ্ছে প্রতিনিয়ত । এসময় এসব স্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরী। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনো ভ্যাকসিন না থাকা রোগীদের ভয়ের একটা বড় কারণ।
এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া পৌরসভার প্রশাসক মো. আরিফ-উল-হক বলেন, পৌরশহরের ড্রেন ও ডোবার বর্জ্য অপসারসারণের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পৌর নাগরিকদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রস্তুতি গ্রহণে সতর্ক করা হচ্ছে।