প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪, ৫:৪৬ PM আপডেট: ১১.০৬.২০২৪ ৫:৪৯ PM
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (মূসক) সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতার অপব্যবহার করে চারটি মোবাইল ফোন কোম্পানির ১৫২ কোটি টাকার ভ্যাট সংক্রান্ত সুদ মওকুফের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাহআলম শেখ বাদী হয়ে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। তিনি বলেন, মূসকের সাবেক কমিশনার ওয়াহিদা রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে একক সিদ্ধান্তে চারটি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানকে এই সুবিধা দিয়েছিলেন। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সাবেক কমিশনার একক নির্বাহী সিদ্ধান্তে গ্রামীণফোন লিমিটেড, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেলের ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা অপরিশোধিত সুদ মওকুফ করেছেন।
মোবাইল কোম্পানিগুলো সাবেক কমিশনারকে ঘুষ দিয়ে এই সুবিধা নিয়েছে কি না, জানতে চাইলে খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, এ বিষয়গুলো তদন্তে বেরিয়ে আসবে। মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার উপর প্রযোজ্য ভ্যাট আদায় সংক্রান্ত স্থান ও স্থাপনার উপরে আইনানুগভাবেই ভ্যাট প্রযোজ্য হওয়ায় তা মেনে নিয়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ দাবীকৃত ভ্যাট পরিশোধের বিষয়ে Alternative Dispute Resolution (ADR) সভায় সম্মত হয় এবং যথাসময়ে ১৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ১৫ হাজার ৪৩০ টাকা পরিশোধ করা হয়। এই রাজস্ব নির্ধারিত কর মেয়াদে পরিশোধ না করায় মূসক আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য হারে প্রদেয় সুদের পরিমাণ হয় ১৫২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯০ টাকা। মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭(৩) অনুসারে সুদ আদায়ের জন্য নথি উপস্থাপন করা হলে তৎকালীন কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী অতি দ্রুত সুদের হিসাব করার নির্দেশ প্রদান করেন।
কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী কিছু যুক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে একক নির্বাহী আদেশে অসৎ উদ্দেশ্যে সুদ আদায় করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। ১৫২ কোটি টাকা সুদ আইনানুগভাবে আদায়যোগ্য ছিল। কিন্তু তিনি এই সুদ আদায় না করার একক নির্বাহী সিদ্ধান্তটি প্রদান করেন। ফলে সরকারের ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা আদায় বাধাগ্রস্ত হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।
আসামি ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী আইন বহির্ভূতভাবে একক নির্বাহী সিদ্ধান্তে ১৬টি নথিতে ১৫২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯০ টাকার অপরিশোধিত সুদ মওকুফ করে সরকারের আর্থিক ক্ষতিসাধন করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১৮/৪০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে।