শেরপুরের ঝিনাইগাতী বাজারের শতবর্ষী বড় মসজিদ পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে সম্প্রতি আনা অনিয়ম, অস্বচ্ছতা ও ধর্মীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে নবগঠিত মসজিদ পরিচালনা কমিটি।
বুধবার (১২নভেম্বর) সকালে উপজেলার সোনালী ব্যাংকের নীচতলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগের প্রতিবাদ জানান মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. ছামিউল ইসলাম সাদা।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, “মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে চিরাচরিত নিয়ম মেনে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে ও তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটি কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ বা প্রভাবের ফল নয়; বরং এটি স্থানীয় মুসল্লিদের অংশগ্রহণে গঠিত একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য কমিটি।”
তিনি আরও বলেন, কয়েকজন ব্যক্তি ব্যক্তিগত স্বার্থে ও অতীতের প্রভাব হারানোর আশঙ্কায় মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সাধারণ মুসল্লিদের বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মসজিদ মার্কেটের দোকান ভাড়ার সিকিউরিটি টাকার বিষয়ে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। শতবর্ষী এই মসজিদ ও মার্কেটের পুনর্নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে স্বচ্ছভাবে অর্থ লেনদেন করা হয়, যার সব হিসাব-নিকাশ যথাযথভাবে সংরক্ষিত আছে।
এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, মসজিদের ৫৫২ নং প্লটের সংলগ্ন সরকারি খাস জমি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই ব্যক্তিরা অতীতে কমিটিতে দায়িত্বে থাকলেও তখন এ বিষয়ে কোনো আপত্তি তোলেননি। প্রকৃতপক্ষে, মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংলগ্ন খাস জমির একটি অংশ মসজিদের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, যা মসজিদের ঐতিহ্যের অংশ— এখানে কারো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই।
মো. ছামিউল ইসলাম সাদা অভিযোগ করেন, “সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকারী জহুরুল ইসলাম মিলন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জাকির হোসেন ওই দলের সহ-সভাপতি। তাঁরা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ও স্থানীয়ভাবে অশান্তি সৃষ্টি করার এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।”
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, শতবর্ষী এই মসজিদটির নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ বহু বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে চলছে। কিন্তু কিছু ব্যক্তি পবিত্র এই কাজেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন— যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
শেষে তিনি সাংবাদিক, মুসল্লি ও স্থানীয় শুভানুধ্যায়ীদের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করে বলেন, “আপনাদের কলমের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য প্রকাশ পেলে ধর্মীয় ঐক্য রক্ষা পাবে, বিভ্রান্তি দূর হবে এবং শতবর্ষী এই পবিত্র মসজিদ নির্মাণের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হবে ইনশাআল্লাহ।”
উক্ত সম্মেলনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাদশা', উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আব্দুল মান্নান, উপজেলা ওলামা দলের সাবেক সভাপতি জহুরুল ইসলাম, ক্ষুদ্র বণিক সমিতির সভাপতি মোখলেছুর রহমান খাঁন, ইউপি সদস্য জাহিদুল হক মনির, অত্র মাদ্রাসার সেক্রেটারি আলহাজ্ব ছমির আলী মল্লিক সহ অত্র মসজিদ কমিটির সকল সদস্য, সম্মানিত মুসল্লীসহ গণমাধ্যম কর্মিরা উপস্থিত ছিলেন।