রাজধানীতে সাম্প্রতিক সহিংসতা, ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিবি বলছে, আইন প্রয়োগের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করে এসব কার্যক্রম দমন করা হবে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়েছি। যারা ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনের যতটুকু প্রয়োগের ক্ষমতা আমাদের আছে, সেটার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করবো।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে নাশকতা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অভিযোগে ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। নগরবাসী আমাদের পাশে থাকলে আমরা দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারবো।
সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ডেডলাইন’ ঘিরে উসকানিমূলক বক্তব্য ও সহিংসতার আহ্বান সংক্রান্ত পোস্টের বিষয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখছি— কিছু ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া প্রচারণা চালাচ্ছে, ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে। তাদের অনেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছে এবং এখানকার কিছু সরল মানুষকে ব্যবহার করছে।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমরা দেখেছি, কয়েকজন প্ররোচণাকারী রিকশাচালক বা সাধারণ পথচারীদের ৫০০ টাকা দিয়ে স্লোগান দিতে বলছে, ভিডিও করছে এবং তা অনলাইনে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এক রিকশাচালককে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, সে কিছুই বোঝে না, কেবল টাকার বিনিময়ে কাজটা করেছে।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখেছি, ওই রিকশাচালক নিজের এলাকায় নিয়মিত রিকশা চালায়, তার একটি সাধারণ বাটন মোবাইল ফোন আছে, সে কোনও রাজনৈতিক বা সহিংস কর্মকাণ্ডে যুক্ত নয়। অর্থাৎ এইভাবে নিরীহ মানুষকে ব্যবহার করে অনেকে বিভ্রান্তিকর ভিডিও তৈরি করছে।
শফিকুল ইসলাম বলেন, যারা সবচেয়ে বেশি উত্তেজনামূলক বক্তৃতা দিচ্ছে, তারা দেশের বাইরে বসে এসব করছে। তারা নিজেরা মাঠে নেই, কিন্তু নিরীহ মানুষকে উসকে দিচ্ছে। এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ করতে হলে সবাইকে সামাজিকভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সামাজিকভাবে যদি আপনারা সচেতনতা ও প্রচার-প্রচারণা চালান, তাহলে এই মানসিকতা থেকে ভয়ের ভিত্তিটাই কেটে যাবে। নগরবাসী ও গণমাধ্যম যদি একসঙ্গে কাজ করে, তাহলে এই পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে।
অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা যে ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছি, তাদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাদেরও শনাক্ত করা হচ্ছে। রাজধানীতে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করতে চাওয়া কোনও গোষ্ঠীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি সবাইকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানান।