প্রথম টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৮০ ওভারে ৩২০/১ (জয় ১৬২*, মুমিনুল ৬৯*; সাদমান ৮০)
আয়ারল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৯২.২ ওভারে ২৮৬/১০ (ইয়াং ৬*; বালবার্নি ০, স্টার্লিং ৬০, টেক্টর ১, কারমাইকেল ৫৯,
ক্যাম্ফার ৪৪, টাকার ৪১, ম্যাকব্রিন ৫, জর্ডান ৩০, হামফ্রিজ ০, ম্যাকার্থি ৩১)
জয়ের সেঞ্চুরির পর মুমিনুলের ফিফটি
মাহমুদুল হাসান জয়ের সেঞ্চুরির পর ৩৬তম টেস্ট ফিফটি তুলে নিয়েছেন মুমিনুল হকও। তাদের ব্যাটে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেও প্রতিরোধ গড়েছে বাংলাদেশ। দুজনের পার্টনারশিপ দাঁড়িয়েছে শতরানের।
চায়ের বিরতি থেকে ফিরেই জয়ের সেঞ্চুরি
৯৪ রান নিয়ে চায়ের বিরতিতে গিয়েছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তৃতীয় সেশনে ফিরে দ্বিতীয় ওভারেই তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। তাছাড়া মুমিনুলের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েছেন পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটিও।
সাদমানের উইকেট পড়লেও দ্বিতীয় সেশনও বাংলাদেশের
প্রথম সেশনের মতো দ্বিতীয় সেশনেও দাপট দেখালো বাংলাদেশ। তবে সেশনের মতো অবিচ্ছিন্ন থাকেনি শুরুর জুটি। এই সেশনে উদ্বোধনী জুটিতে ভাঙে ১৬৮ রানে। সাদমান ৮০ রানে হামফ্রিজের বলে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন। অপরপ্রান্তে রয়েছেন মাহমুদুল হাসান। সেঞ্চুরির কাছেই আছেন তিনি। ৯৪ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে খেলছেন মুমিনুল হকও। তিনি অপরাজিত ২১ রানে।
২৪ ওভারে বিনা উইকেটে ১০৯ রানে প্রথম সেশন শেষ করা বাংলাদেশ এই সেশনে একটি উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রানে চায়ের বিরতিতে গেছে। তারা পিছিয়ে আর ৮৮ রানে।
উদ্বোধনী জুটিতে প্রথম সেশনে দাপট বাংলাদেশের
প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডকে দ্বিতীয় দিন সকালে তিন ওভারের মধ্যেই ২৮৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। তার পর বাকিটা সময় আইরিশ বোলারদের শাসন করেছেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়। তাদের শুরুর জুটিতে বিনা উইকেটে ১০৯ রানে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে স্বাগতিক দল।
বাংলাদেশ এখনও ১৭৭ রানে পিছিয়ে। ওয়ানডে মেজাজে খেলে পঞ্চম ফিফটি তুলে নিয়েছেন জয়। তিনি ব্যাট করছেন ৫০ রানে। সাদমানও ওয়ানডে মেজাজে ষষ্ঠ ফিফটির দেখা পেয়েছেন। তিনি ব্যাট করছেন ৫৮ রানে।
আইরিশদের ২৮৬ রানে থামালো বাংলাদেশ
সিলেটে প্রথম টেস্টে দিনের শেষ বলেই হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। শেষ বলে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো আয়ারল্যান্ডের অষ্টম উইকেট জুটি ভাঙেন তাইজুল। এই জুটিই আইরিশদের তিনশ রানের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছিল। জুটি ভাঙায় গতকাল ৯০ ওভারে প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ২৭০ রানে প্রথম দিন শেষ করে সফরকারীরা। তাই দ্বিতীয় দিনের শুরুতে লক্ষ্য ছিল যতদ্রুত সম্ভব আইরিশদের গুটিয়ে দেওয়া যায়। তাতে অবশ্য সফল বাংলাদেশ। তিন ওভারের মধ্যেই বাকি দুই উইকেট নিয়ে নিয়েছে। তাতে আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থেমেছে ২৮৬ রানে। এই সময় অবশ্য দ্রুত কিছু রানও নিতে পেরেছে সফরকারী দল।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম ওভারে হাসান মাহমুদকে দুটি চার মেরেছিলেন ম্যাকার্থি। পরের ওভারে নতুন ব্যাটার হামফ্রিজকে (০) এলবিডাব্লিউ করেন তাইজুল। নতুন ব্যাটার ক্রেইগ ইয়াং নেমে একই ওভারে ছক্কাও মারেন। কিন্তু পরের ওভারে হাসান মাহমুদ ব্যারি ম্যাকার্থিকে ৩১ রানে বোল্ড করলে সেখানেই শেষ হয় আয়ারল্যান্ডের ইনিংস।
গতকাল টস জিতে আয়ারল্যান্ড ব্যাট করতে নামে। বাংলাদেশের প্রাপ্তি ছিল ৮ উইকেট। কিন্তু আইরিশরাও ব্যাট হাতে লড়াই করেছে। প্রথম দিনে শুরুর ওভারে হাসানের বলে প্রথম উইকেট হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। তার পর বাংলাদেশের ক্যাচ মিসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৯৬ রানের জুটি গড়েন পল স্টার্লিং ও কেড কারমাইকেল।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে এই জুটি ভাঙে বাংলাদেশ। ৬০ রানে সেট হয়ে যাওয়া পল স্টার্লিংকে আউট করেন নাহিদ। এরপর নতুন ব্যাটার হ্যারি টেক্টরকেও সাজঘরে পাঠান মিরাজ। দ্রুত দুই উইকেট পড়লেও অভিষিক্ত কেড কারমাইকেল দলকে চাপে পড়তে দেননি। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তুলে নেন নিজের প্রথম টেস্ট ফিফটি। মাঝের দিকে ক্যাম্ফারের সঙ্গে ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটিও গড়েন তিনি। কিন্তু ৫৯ রানে এসে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে মিরাজের বলে কাটা পড়েন কারমাইকেল।
তার পর পঞ্চম উইকেটে ক্যাম্ফার ও টাকার গড়ে তোলেন আরও ৫৩ রানের জুটি। ৪৪ রানে ব্যাট করতে থাকা ক্যাম্ফারকে ফিরিয়ে ছন্দপতন ঘটান হাসান মুরাদ। অভিষিক্ত এই স্পিনার আরও একবার আঘাত হানলে ফিরে যান আরেক সেট ব্যাটার টাকারও (৪১)।
তার পর ধস নামে দলটির ইনিংসে। দ্রুত সময়ে মিরাজের তৃতীয় শিকারে সাজঘরে ফেরেন ম্যাকব্রিন। তাতে সপ্তম উইকেটের পতন হলেও অভিষিক্ত জর্ডান নিল ও ম্যাককার্থি জুটি গড়ে যোগ করেন ৪৮ রান। তাদের জুটি আয়ারল্যান্ডকে ২৫০ রানের গণ্ডি পার করতে সাহায্য করেছে। এই জুটি ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেও শেষ বলে জর্ডানকে ৩০ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তাইজুল। দ্বিতীয় দিনও তার ঘূর্ণি আইরিশদের বিপদে ফেলে। যার ফলে তিনশ রান পাওয়া হয়নি তাদের।
অভিষেকে সবচেয়ে নজরকাড়া পারফরমার ছিলেন হাসান মুরাদ। তাছাড়া বাংলাদেশের পাঁচ বোলারই উইকেট পেয়েছেন। মিরাজ নিয়েছেন তিনটি। মুরাদ নিয়েছেন দুটি উইকেট। হাসান মাহমুদ ও তাইজুল ইসলামও নিয়েছেন দুটি। একটি নিয়েছেন নাহিদ রানা।