দিল্লিতে প্রাণঘাতী গাড়ি বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) নির্ধারিত সফরে ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে পৌঁছে এমন হুঁশিয়ারি দেন মোদি। এর আগে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুকের ৭০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে যোগ দিতে বর্তমানে থিম্পুতে অবস্থান করছেন মোদি।
সেখানে এক সভায় মোদি বলেন, “গত রাতের দিল্লির ভয়াবহ ঘটনাটি পুরো জাতিকে নাড়া দিয়েছে। আমাদের সংস্থাগুলো ষড়যন্ত্রের মূল পর্যন্ত পৌঁছাবে। এই ঘটনায় জড়িত কেউই রেহাই পাবে না।”
এদিকে দিল্লিতে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। সোমবার সন্ধ্যায় ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে এই বিস্ফোরণ ঘটে। ২০১১ সালের পর ৩ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার এই কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত শহরটির সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিস্ফোরণ।
দিল্লির উপ-পুলিশ কমিশনার রাজা বানথিয়া জানান, বিস্ফোরণটি তদন্ত করা হচ্ছে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিস্ফোরক আইন, এবং অন্যান্য ফৌজদারি আইনের আওতায়।
তিনি বলেন, “তদন্ত এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করা খুবই আগাম হবে।” সোমবার (১০ নভেম্বর) রাত ৭টার কিছু আগে লালকেল্লার সংলগ্ন পুরনো দিল্লির এক ব্যস্ত এলাকায় একটি গাড়ি ট্রাফিক সিগন্যালে থামার পরই বিস্ফোরিত হয়। এতে আশেপাশের কয়েকটি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণের পরপরই যে দোকানগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত সেগুলোর বেশিরভাগই খোলা হয়নি।
বিস্ফোরণস্থলটি সোমবার রাত থেকেই সাদা কাপড়ের বেড়া দিয়ে সম্পূর্ণ সিল করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। দিল্লি মেট্রো জানিয়েছে, লালকেল্লা স্টেশন নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানিয়েছেন, “ঘটনার দ্রুত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। শিগগিরই তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।”
লালকেল্লা ১৭শ শতকের মোগল আমলের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। সারা বছরই এটি পর্যটকে পরিপূর্ণ থাকে। প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিবছর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে এখান থেকেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ওই হামলার জন্য ভারত তখন পাকিস্তান-সমর্থিত ইসলামপন্থি জঙ্গিদের দায়ী করেছিল— যা ইসলামাবাদ অস্বীকার করে।
সেই ঘটনার জেরে দুই দেশের মধ্যে দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘাত ঘটে, যা চার দিনের লড়াই শেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে গিয়ে শেষ হয়।