প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৭:১০ পিএম (ভিজিট : ১১)

কুমিল্লায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে কিছু বিক্ষুব্ধ লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে চার মাজারে হামলা ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলার হোমনা উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের আসাদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি ফেসবুক আইডি থেকে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন। এ ঘটনায় স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা থানার সামনে জড়ো হয়ে পোস্টকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। বুধবার দুপুরে উপজেলার আসাদপুর গ্রামের ফকিরবাড়ি এলাকা থেকে পোস্টকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় বুধবার দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা হোমনা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে পোস্টকারীর বিরুদ্ধে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে ফেসবুকে আপত্তিকর ওই পোস্টকে কেন্দ্র বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে আসাদপুর গ্রামে কফিল উদ্দিন শাহ ও হাওয়ালি শাহ মাজারে আগুন এবং কালাই শাহ ও আবদু শাহ মাজারে হামলা ও ভাঙচুর করে।
ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর কুমিল্লা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান ও হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষ্যেমালিকা চাকমা পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেম্যালিকা চাকমা বলেন, বুধবার মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির কারণে জনতার মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিক্ষুব্ধ জনতা মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে।
উপজেলা ইসলামী ফ্রন্টের সেক্রেটারি সফিক রানা ও ইসলামী যুব সেনার নেতা শরিফুল বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছিলেন। আমরা তার ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।
হোমনা থানার ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটূক্তিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে জনতার দাবির প্রেক্ষিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে আজ আদালতের সোপর্দ করা হয়। তবুও সকালে বিক্ষুব্ধ লোকজন মাজারে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে যারা ঘটনার উসকানি দিয়ে মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।