
সপ্তাহের সবচেয়ে ব্যস্ত দিন বৃহস্পতিবার। এদিন রাজধানী ঢাকায় মানুষের ভিড় অন্য সময়ের তুলনায় বেশি থাকে। এর সঙ্গে আজ যোগ হয়েছে সাতটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি। আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা।
দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে একসঙ্গে এ পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে ঢাকার পরীক্ষার্থীরা আজই রাজধানীতে জড়ো হচ্ছেন। সব মিলিয়ে রাজধানীতে আজ তীব্র যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত আন্দোলন, মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ড. আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি ও জাগপা— এই সাতটি দল প্রায় অভিন্ন দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা বায়তুল মোকাররম, প্রেস ক্লাব, পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল ও শাহবাগ এলাকায় সমাবেশ ও মিছিল করবে।
ঘোষণা অনুযায়ী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আজ জোহরের নামাজ শেষে বাইতুল মোকাররম উত্তর গেটে সমাবেশ ও মিছিল করবে। পরে সেখান থেকে প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত যাবে মিছিল।
বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে আসরের পর সমাবেশ করবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মামুনুল হক)।
দলটির প্রচার সম্পাদক হাসান জুনাইদ জানিয়েছেন, সমাবেশ পরবর্তী মিছিল যাবে বিজয়নগর, কাকরাইল হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত।
এদিকে বিকেল ৩টায় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররমের দিকে যাবে খেলাফত আন্দোলন। বিকেল সাড়ে ৪টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় সমাবেশ, পরে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত মিছিল করে আবার বিজয়নগরে ফিরবে জাগপা। বিকেল ৫টায় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করবে নেজামে ইসলাম।
অন্যদিকে বিকেল সাড়ে ৪টায় বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করবে জামায়াতে ইসলামী।
পরে পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত মিছিল করবে দলটি। এই কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছে জামায়াত।
গুলিস্তান হয়ে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষ চট্টগ্রাম-কুমিল্লাসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল থেকে ঢাকায় আসা-যাওয়া করেন। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে আজ তাদের ভোগান্তি বাড়বে। সচিবালয়, মতিঝিল, সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, মন্ত্রীপাড়া ও আশপাশের এলাকার অফিসফেরত কর্মীরাও পড়তে পারেন ভোগান্তিতে।
শাহবাগ বন্ধ হলে তার প্রভাব পড়বে ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজারসহ আশপাশের এলাকায়। এ ছাড়া শাহবাগ ও কাকরাইল এলাকায় অবস্থিত হাসপাতালগুলোতেও রোগী আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তি তৈরি হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (সাবেক পিজি হাসপাতাল), ঢাকা মেডিক্যাল, বারডেম, ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতাল, সায়েন্সল্যাবের ল্যাবএইড হাসপাতাল, কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালের রোগী ও স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়তে পারেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে। কিন্তু যখন রাজনৈতিক কর্মসূচি হয়, তখন ব্যাপক লোকসমাগমের কারণে স্বাভাবিক যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। বিকল্প রাস্তাগুলোও চাপ সামলাতে পারে না। এতে অচলাবস্থা তৈরি হয়।
তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকার প্রতিটি এলাকা ব্যস্ত। তাই যেখানে কর্মসূচি দেওয়া হোক না কেন, মানুষের দুর্ভোগ তৈরি হবেই। এতে সময়, অর্থ, শ্রমের ক্ষতি হয়; যাত্রীরা ভোগেন, চালকরা ভোগেন, এমনকি জরুরি রোগীকেও হাসপাতালে নিতে দেরি হয়ে যায়।’
পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কর্মসূচি না দিতে ট্র্যাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ থাকে রাজনৈতিক নেতাদের কাছে। বিশেষ করে বড় দলগুলোর কর্মসূচিতে অচল হয়ে পড়ে ঢাকা।