
হামজা-জামালরাও খেলছেন এশিয়ান কাপ বাছাই। হোম-অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতি হওয়ায় সেই বাছাই প্রক্রিয়া ২০২৫ সালের মার্চে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের মার্চ পর্যন্ত চলবে। অন্যদিকে, ঋতুপর্ণা-আফিদাদের এশিয়ান কাপ বাছাই হবে একটি কেন্দ্রীয় ভেন্যুতে। মিয়ানমারে চার দলের মধ্যে গ্রুপসেরা হওয়া দল আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় এশিয়া কাপে খেলার সুযোগ পাবে।
বাংলাদেশ নারী দল টানা দু’বারের দক্ষিণ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন। এবার তাই লক্ষ্য এশিয়ার সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার বেশ দৃঢ়কণ্ঠেই জানালেন, ‘আমরা জর্ডানে দু’টি ম্যাচ খেলেছি। ভালো প্রস্তুতি হয়েছে। এশিয়া কাপে খেলার আশা রাখি।’ অধিনায়ক সরাসরি আশা ব্যক্ত করলেও কোচ পিটার বাটলার অবশ্য একটু বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে মন্তব্য করেছেন, ‘মিয়ানমার স্বাগতিক ও কঠিন প্রতিপক্ষ। বাংলাদেশের জন্য কাজটা চ্যালেঞ্জিং। আমরা বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান দুই দলকে হারিয়ে এগিয়ে থাকতে চাই।’
মিয়ানমার নারী ফুটবলে বেশ প্রতিষ্ঠিত নামই। বাংলাদশে নারী ফুটবল দলের বড় ব্যবধানে হারের রেকর্ড রয়েছে মিয়ানমারের বিপক্ষে। অবশ্য সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মিয়ানমারের বিপক্ষে লড়াই করার প্রত্যয় রয়েছে বাংলাদেশ দলের। সেই ব্রত নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) রাতে মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে বাংলাদেশের মেয়েরা। বাহরাইন র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও, তাতে খুব একটা মাথাব্যথার কারণ নেই। গ্রুপের আরেক দেশ তুর্কমেনিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে।
জর্ডান সফরের মতো এই সফরেও পিটার বাটলার ডাকেননি সাবিনা খাতুন ও মাসুরা পারভীনকে। সংবাদ সম্মেলনে টুর্নামেন্ট নিয়ে নানা প্রশ্নের একেবারে শেষদিকে সাবিনাদের প্রসঙ্গ উঠেছিল। অধিনায়ক আফিদা খন্দকারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘নো কমেন্টস।’ পাশ থেকে বাটলার আফিদাকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন বেশ সুন্দর উত্তর। পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের এই প্রশ্নটি আমাকে করা উচিৎ ছিল, অধিনায়ককে নয়। আপনারা সব সময় পোক (অন্য কিছু ইঙ্গিত বা আঙুল তোলা) করতে পছন্দ করেন।’ পরবর্তীতে ইংরজেীতে বাটলারকে সেই প্রশ্ন করা হলে তিনিও শুরুতে ‘নো কমেন্টস’ বলেন। পরবর্তীতে অবশ্য সাবিনা-মাসুরাকে তার দরকার নেই সেই ব্যাখ্যাই দিয়েছেন। যদিও ফুটবলাঙ্গনের মতে এখনও সাবিনা-মাসুরা দলে খেলার মতো পরিস্থিতি রয়েছে।
নারী ফুটবল দলে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বাটলারের অসন্তোষ রয়েছে। এমনও গুঞ্জন রয়েছে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পর দায়িত্বও ছাড়তে পারেন তিনি। সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্ন হলে তিনি বলেন, ‘সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতা রয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি-বাস্তবতাও আমি বুঝি। এটা ইস্যু নয় গুঞ্জনই।’
জর্ডানে খেলা সর্বশেষ দল থেকে বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন আছে তিনটি। বাদ পড়েছেন দুই গোলরক্ষক মেঘলা রানী, ফেরদৌসী আক্তার এবং মিডফিল্ডার শান্তি মার্ডি। ফিরেছেন দুই গোলরক্ষণ স্বর্ণা রানী, মিলি আক্তার ও রক্ষণভাগের নিলুফা ইয়াসমিন। বাংলাদেশ ২৯ জুন বাহরাইন, ২ জুলাই স্বাগতিক মিয়ানমার ও ৫ জুলাই তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে খেলবে। স্বাগতিক মিয়ানমার ইয়াঙ্গুনে খেলা আয়োজন করেছে। এদিকে, ম্যাচের সম্প্রচার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি বাফুফে।
বাংলাদেশের স্কোয়াড
গোলরক্ষক : মিলি আক্তার, রুপনা চাকমা, স্বর্ণা রানী
ডিফেন্ডার : শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার সিনিয়র, আফঈদা খন্দকার, জয়নব বিবি, নিলুফা ইয়াসমিন
মিডফিল্ডার : মনিকা চাকমা, মারিয়া মান্দা, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রানী, কোহাতি কিসকু, হালিমা আক্তার
ফরোয়ার্ড : ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র, নবীরণ খাতুন, উমেলা মারমা, মোসাম্মত সাগরিকা, শাহেদা আক্তার, সুরভী আকন্দ, মোসাম্মত সুলতানা