বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চায় আগ্রহী হয়ে ভবিষ্যতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে, এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান।
শুক্রবার (২৩ মে) রাজধানীর গুলশানে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ডা. জোবাইদা বলেন, ভবিষ্যতে আমরা আশা করব, তোমরা বিজ্ঞানের জগতে উদ্ভাবন করে পৃথিবীর সব মানুষের জন্য কিছু করবে। ইনশাল্লাহ্ এ কাজে তোমরা আমাদের সহযোগিতা পাবে। একটি উদ্ভাবনী ও জ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশের স্বপ্ন তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানচর্চার কোনো শেষ নেই। বিজ্ঞানচর্চার মাধ্যমে পৃথিবীকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে। আমার বিশ্বাস তোমরা তা পারবে।

অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোর তথা ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে ডা. জুবাইদা রহমান বলেন, প্রত্যেক প্রতিযোগিকে তাদের অভিনব বিজ্ঞান প্রজেক্টের জন্য জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর শাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে গত ৬ মে দেশে ফিরেছেন ডা. জুবাইদা রহমান। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশে ফিরে প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখলেন তিনি। এর আগে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন তিনি। এরপর একে একে ১৭ বছর কেটে গেলেও দেশে ফিরতে পারেননি ডা. জুবাইদা রহমান। স্বামী তারেক রহমান ও একমাত্র সন্তান ব্যারিস্টার জেইমা রহমানকে নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছিলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মকান্ডের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মেলায় প্রতিযোগী ও বিজয়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মেধা, অধ্যবসায় এবং আত্মনির্ভরশীলতা সত্যিই অসাধারণ এবং আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমি প্রত্যাশা করি, তোমরা তোমাদের জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে সার্থক হও এবং বিশ্বের দরবারে দেশের মুখ উজ্জ্বল করো। বিজ্ঞানের প্রতি তোমাদের যে মমত্ববোধ তা দেখে আশা করি ভবিষ্যতে তোমরা বিজ্ঞানের জগতে উদ্ভাবন করে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের জন্য কিছু করবে। ইনশাল্লাহ আমাদের সকলের সহযোগিতা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানের জগতে যেকোনো সময় যেকোনো রকম প্রশ্ন তোমাদের থাকলে সে বিষয়ে তোমরা বিচারকমণ্ডলীর কাছে যেতে পারো। তারা তোমাদের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন। বিজ্ঞান চর্চার কোনো শেষ নেই। এর মাধ্যমে পৃথিবীকে অনেক কিছু দেওয়ার আছে। আমার বিশ্বাস তোমরা তা পারবে।
জেডআরএফ’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের ভার্চুয়াল সভাপতিত্বে এবং ডাইরেক্টর (প্রোগ্রাম) ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন জেডআরএফ’র ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার। মূলত শিশু-কিশোর ও নতুন প্রজন্মের মাঝে বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন ও সর্বতোভাবে বিজ্ঞান চর্চার অনুপ্রেরণাকে লক্ষ্য করে গত ৪ বছর ধরে ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। আর জেডআরএফ’র এই ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলা ডা. জুবাইদা রহমানের মস্তিষ্কপ্রসূত ধারণা। মেলায় বিজয়ী ১৭ জনের মাঝে পুরস্কার (ল্যাপটপ) ও সনদ বিতরণ করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার (ভার্চুয়ালি) বলেন, ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলা যে সম্ভব সেটি প্রমাণিত করেছেন জেডআরএফ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. জুবাইদা রহমান। আগামীতে স্বশরীরে বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করা হবে ইনশাল্লাহ। ডাইরেক্টর ও উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় শেষে জেডআরএফ’র কার্যালয়ে ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার দেওয়ার পাশাপাশি সংগঠনের বোর্ড অব ডাইরেক্টরস ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জুবাইদা রহমান। তারেক রহমানকে প্রেসিডেন্ট ও ডা. জুবাইদা রহমানকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করে ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর ২৩ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ ‘বোর্ড অব ডাইরেক্টরস কমিটি’ গঠন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)। এছাড়া ৭ সদস্যের একটি উপদেষ্টা পরিষদও গঠন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে পরিচালকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মো. শামীম (ফাইন্যান্স), ডা. সৈয়দা তাজনীন ওয়ারিস সিমকী (প্ল্যানিং), কৃষিবিদ খন্দকার মাহফুজুল হক বাচ্চু (প্রোগ্রাম), প্রকৌশলী মাহবুব আলম (প্রোগ্রাম), অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান (প্রোগ্রাম), অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী (প্রোগ্রাম), আমিরুল ইসলাম কাগজী (প্রোগ্রাম), অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, কৃষিবিদ আনোয়ারুন্নবী মজুমদার বাবলা, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, অধ্যাপক ড. শেখ মনির উদ্দিন, প্রকৌশলী একেএম জহিরুল ইসলাম, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, প্রকৌশলী উমাশা উমায়ন মনি চৌধুরী ও হাফিজ আল আসাদ সাঈদ খান। উপদেষ্টাদের মধ্যে ছিলেন- ডা. এ এস হায়দার পারভেজ, কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, অধ্যাপক ড. মো. আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী ও প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ। এছাড়াও বিএনপির চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) একেএম শামসুল ইসলাম শামস, তারেক রহমানের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী মিয়া নূরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু, মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন প্রমুখ।