প্রকাশ: সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৭:৩৮ PM
গাজীপুরের কালীগঞ্জে কৃষকদের মাঝে বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অল্প জায়গায় কম পরিশ্রমে লাভজনক ফলন পাওয়ায় কৃষকেরা বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাগানবিলাসী কৃষকরা ফলবাগানের ফাঁকে ফাঁকে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করছেন।
উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের শষী মার্কেট এলাকার কৃষক মোহাম্মদ আলী ও তার পুত্র তুহিন জানান, ইউটিউব থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রথমে সীমিত আকারে বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। গত মৌসুমে আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় এবার তারা এক হাজার বস্তায় আদা রোপণ করেছেন। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলায় প্রায় ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ হচ্ছে। ফলবাগানের গাছের ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে বসানো বস্তাগুলোতে ইতোমধ্যেই আদার কন্দ থেকে অঙ্কুর গজিয়েছে এবং গাছ বড় হতে শুরু করেছে। ফলন পেতে সময় লাগবে আরও প্রায় তিন মাস।
মোহাম্মদ আলী জানান, একেকটি বস্তায় ২০-২৫ কেজি বেলে দোআঁশ মাটি, জৈব ও রাসায়নিক সার ও ছাই মিশিয়ে তিনটি আদা চারা রোপণ করতে হয়। এই পদ্ধতিতে আগাছার ঝামেলা কম, পরিচর্যা সহজ এবং পুকুরপাড় বা গাছের নিচেও সহজে চাষ করা যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম জানান, এ বছর কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বস্তায় চাষ করলে আদার কন্দ পচা রোগের ঝুঁকি কম থাকে এবং অল্প জায়গায় অধিক উৎপাদন সম্ভব হয়। তিনি আরও জানান, আধো আলো-ছায়ায় আদা ভালো হয় এবং সঠিক সার ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি বস্তা থেকে এক কেজি থেকে সর্বোচ্চ তিন কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া সম্ভব। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিক টন আদার চাহিদা থাকলেও উৎপাদন হয় মাত্র ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। ফলে ঘাটতি মেটাতে আদা চাষ সম্প্রসারণ অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। বস্তায় আদা চাষের এই কার্যকর পদ্ধতি কৃষকদের মধ্যে নতুন আশা জাগিয়েছে। আগামীতে আরও বেশি কৃষক এই চাষ পদ্ধতির দিকে ঝুঁকবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।