প্রকাশ: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ১০:১৬ PM
পর্দা উঠলো মর্যাদাপূর্ণ কান চলচ্চিত্র উৎসবের। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাত ১১টা ১৫ মিনিটে শুরু হয় ৭৮তম আসরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। জমকালো এ আয়োজনে নানা দেশের তারকারা অংশ নিয়েছেন। হাজির হয়েছেন বরেণ্য সব পরিচালক ও প্রযোজকেরা। 
উৎসব চলবে ২৪ মে পর্যন্ত। উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অস্কারজয়ী হলিউড অভিনেতা রবার্ট ডি নিরো। এ আসরে তাকে দেওয়া হয় সম্মানসূচক পাম দর। পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী ১৮ মে অভিনেত্রী নিকোল কিডম্যানকে উইমেন ইন মোশন ২০২৫ সম্মাননা দেওয়া হবে। উদ্বোধনী সিনেমা হিসেবে দেখানো হয়েছে অ্যামেলি বনিনের ‘লিভ ওয়ান ডে’। আমেলি বনিন তার প্রথম চলচ্চিত্রেই প্রমাণ করেছেন তিনি শিল্পের একটি নতুন ধারা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম। কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতার বাইরে হলিউড সুপারস্টার টম ক্রুজের ‘মিশন ইমপসিবল’-এর বিশেষ প্রদর্শনী হবে। গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে বুধবার এই ছবি দেখানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হলিউড তারকা ক্রুজ নিজেও। এবারে মূল প্রতিযোগিতায় ২২টি ছাড়াও আঁ সাঁর্তে রিগা বিভাগে ২০টি, প্রতিযোগিতার বাইরে ১২টি, কান প্রিমিয়ারে ১০টি, স্পেশাল স্ক্রিনিংসে ৯টি, কান ক্ল্যাসিকসে ৩০টি, সিনেমা দ্যু লা প্লাজে ১৬টি, শর্টফিল্ম প্রতিযোগিতায় ১১টি, শিক্ষার্থী নির্মাতাদের বিভাগ লা সিনেফ-এ ১৬টি ও ইমারসিভ প্রতিযোগিতায় ১৬টিসহ মোট ১৬২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য, মাঝারি দৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখানো হবে। ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের শুরুতেই গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে আয়োজকদের নিরবতা ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র বিতর্ক। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বহু চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এই নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, গাজার মতো মানবিক বিপর্যয়ের সময়ে একটি বিশ্বমানের চলচ্চিত্র উৎসবের পক্ষ থেকে অবস্থান না নেওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক। ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী দিনে সম্মানসূচক স্বর্ণপাম দেওয়া হয় অস্কারজয়ী রবার্ট ডি নিরোকে। পুরস্কার গ্রহণ করে ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেন ৮১ বছর বয়সী অভিনেতা। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘শিল্পবিরোধী প্রেসিডেন্ট’ আখ্যা দিয়ে ‘শিল্পের শত্র“’ বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নির্মিত সব চলচ্চিত্রের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পর থেকেই সিদ্ধান্তটি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। সেই আঁচ লাগলো কানের মঞ্চেও। ডি নিরো এরপর ট্রাম্পের দিকে তার বাক্যবাণ ছুঁড়ে দেন। তিনি বলেন, ‘সৃজনশীলতার কোনো দাম হতে পারে না, কিন্তু ট্রাম্প তাতে কর বসাতে চান। এটা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সংকট। তিনি শিল্প, মানবিকতা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে তহবিল সহায়তা হ্রাস করেছেন। এখন তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নির্মিত চলচ্চিত্রের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। আপনি সৃজনশীলতার ওপর মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন না। এই সমস্ত আক্রমণ অগ্রহণযোগ্য। সিনেমার মতো আমরা সবাই বিষয়টি বসে বসে দেখতে পারি না। আমাদের কাজ করতে হবে এবং আমাদের এখনই কাজ করতে হবে।’ পুরস্কার গ্রহণ করে ডি নিরো বলেন, ‘কান উৎসব আমার হৃদয়ের খুব কাছের। যখন চারপাশের দুনিয়া টুকরা টুকরা হয়ে যাচ্ছে, তখন কান আমাদের একত্র করে গল্পকার, নির্মাতা, দর্শক আর বন্ধুদের। যেন ঘরে ফেরা।’