প্রকাশ: শনিবার, ১০ মে, ২০২৫, ৯:৫৫ PM
আকিকার মাংস ভাগাভাগি নিয়ে ফরিদপুরের সালথায় গ্রাম্য দুই দলের সংঘর্ষে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া গ্রামে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে রাঙ্গারদিয়া গ্রামের নান্নু মেম্বারের সমর্থক উজ্জল মোল্যার সাথে জালাল মাতুব্বরের সমর্থক ফারুক মোল্যার আকিকার মাংস ভাগাভাগি নিয়ে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির এক পর্যায়ে দুইপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তারই সুত্রধরে সকালে প্রফেসর জয়নাল ও আ:লীগ নেতা ফরহাদ মোল্লাসহ খারদিয়া থেকে আগত লোকজন রাংগারদিয়া গ্রামে জালাল মাতুব্বরের সমর্থকদের বাড়ীতে ও লোকজনের উপর হামলা চালায়। এসময় জালাল মাতুব্বরের সমর্থকদের /৫০ টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। খবর পেয়ে সালথা থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সংঘর্ষে আজিজুর (২৮), মিরাজ মোল্যা (৩৫), কামাল হোসেন (২৫), ছায়েম হোসেন (৩৫), সালাম সরদার (৪৭) রোকমান শেখ (৫৫), রেহেনা বেগম (৫০) ও সেতু আক্তার (২০) সহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়।

আহতদের মধ্যে ৮জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তিগণ বলেন প্রফেসর জয়নাল ও আ:লীগনেতা ফরহাদ মোল্লা দুজনে মিলে এলকায় নৈরাজ্য গন্ডগোল ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে আসছে তারই দ্বারাবাহীকতায় আজ রাংগারদিয়া গ্রামে এই লুটতরাজ বাড়ীঘর ভাংচুর হয়েছে। এর আগেও তারা এই গ্রামে সন্ত্রাসী কার্য্যক্রম চালিয়েছে তেমন কোন সুবিধা করতে না পেরে ওত পেতে থেকে গতকাল ময়েনদিয়া বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথে মো: মিরাজ ও হাফিজুরকে মেরে রক্তাত্ত অবস্থায় ফেলে দিয়ে তাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেল নিয়ে যায়। পরে মানুষের চেল্লাচেল্লি শুনে লোকজন এগিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মো: ওবাইদুল হক বলেন আমার ঘর বাড়ী ভাংচুর এ সময় ঘরে রাখা তিন লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় আমি এখন দিশেহারা আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেলো শুধু বিএনপিকে সমর্থন করি বলে। রাতে এ নিয়ে দূ-পক্ষের মধ্যে দাওয়া পাল্টা দাওয়া হলে স্থানীয় লোক বসে এটা মিমাংসার করে দিবে বলে সবাইকে আসস্ত করে। কিন্তু আজ সকাল হতে না হতেই প্রফেসর জয়নাল ও ফরহাদ মোল্লার লোকজনসহ খাড়দিয়া গ্রামের ভাড়াটিয়া লোকজন এনে জালাল মোল্লার সমর্থীত লোকজনের বাড়ীঘর লুটতরাজ ও ভাংচুর করে এ সময় জালাল মোল্লার লোকজন ভয়ে বাড়ীঘর ছেড়ে চলে যায়। সোনাপুর ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল হক বলেন লুটতরাজ করে নিয়ে গেছে ১৫টি গরু যার মধ্যে দুট গরু ফেরত দেওয়া হয়েছে ১৩টি গরুর বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লক্ষটাকা। এবং নগদ টাকা ও স্বর্ণের অলংকার সহ প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার মালামাল লুটকরা হয়েছে।
আমি এর ন্যায়্য বিচার চাই এবং এটাও বলতে চাই অন্য ইউনিয়নের (খারদিয়া) লোক ভাড়াকরে এনে সোনাপুর ইউনিয়নের লোকজনের ভাড়ীঘর লুট করানো কোন নেতার কাজ হতে পারে না আমি তীব্রনিন্দা জানাই। সোনাপুর ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাবু মোল্লা বলেন আমি কোন সময় গন্ডোগোল ফ্যাসাদ পছন্দ করি না তবে রাংগারদিয়া যে ধরণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে আমি এর সঠিক তদন্তের মাধেম্যে সঠিক বিচার কামনা করি।
প্রফেসর জয়নাল হোসেন (সালথা সরকারি কলেজ) এর সাথে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হওয়ার তার কোন বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হলোনা। সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আতাউর রহমান বলেন, রাঙ্গারদিয়া গ্রামে আকিকার মাংস নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে হাতাহাতির জেরে শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতে ও সকালে রাঙ্গারদিয়া গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এলাকা শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও পক্ষ এখনও অভিযোগ করেনি।