প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫, ৭:৫৮ PM
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ন্যাশনাল জুট মিলের ভেতরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মম গণহত্যা চালায়। মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে নির্মমভাবে ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে শহীদদের গণকবরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন—উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তনিমা আফ্রাদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসমিন ঊমি, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলাউদ্দিন, উপজেলা প্রকৌশলী মো. রেজাউল হক, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম, সমাজসেবা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ইসমাইল ভূঁইয়া, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর-ই-জান্নাত, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উম্মে রোমান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির মাস্টার, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ, ইউপি চেয়ারম্যানবৃন্দ ও সাংবাদিক সমাজ।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর, মুক্তিযোদ্ধারা ন্যাশনাল জুট মিলের ভেতরে অবস্থান করছিলেন। সকালবেলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শীতলক্ষ্যা নদী পেরিয়ে মিলের ভেতরে প্রবেশ করে এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। চার দিন ধরে নিহতদের মরদেহ মিলের বাগানে পড়ে ছিল, কিন্তু হানাদার বাহিনীর ভয়ে কেউ এগিয়ে আসতে পারেনি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এলাকাবাসী ১০৬ জন শহীদের মরদেহ ন্যাশনাল জুট মিলের দক্ষিণ পাশে গণকবরে সমাহিত করেন। পরবর্তীতে মিল কর্তৃপক্ষ শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে "শহীদের স্মরণে ১৯৭১" নামে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে এবং গণকবরের পাশে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে। গণহত্যা দিবসে শহীদদের স্মরণে আয়োজিত এ কর্মসূচি নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।