শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ৫ বৈশাখ ১৪৩২
 
শিরোনাম:


আধুনিক স্থাপত্যকলায় পুনঃনিমিত হচ্ছে ৫০০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বারদুয়ারি মসজিদ
আরএম সেলিম শাহী, শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ৭:২০ PM

শেরপুরের বারদুয়ারী মসজিদটি ঐতিহাসিক একটি নিদর্শন। ধারণা করা হয় ভারতীয় উপমহাদেশ যখন ইংরেজদের শাসনের অধীনে ছিলো, তার আগে বারদুয়ারী মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। 

পরবর্তীতে ইংরেজদের শাসনামলে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটি মাটির নিচে দেবে যায় এবং স্থানটি জঙ্গলে রূপান্তরিত হয়। অপর একটি ইসলামী ইতিহাস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে বর্তমান বাংলাদেশ এলাকায় আরব থেকে যখন প্রথম ইসলাম প্রচারে মুসলমানরা আসেন ওই সময়ের একটি দল এই গরজরিপা এলাকায় এসে ইসলাম প্রচার শুরু করে। ধারণা করা হয় ওই সময় মসজিদটি নির্মাণ করা হতে পারে। এদিকে জামালপুরের মাওলানা আব্দুল আজিজ সাহেব ষাটের দশকে শেরপুর জেলার শ্রীবরদীতে ভূমি জরিপ কার্যালয়ে পিএলএ পদে চাকরি করতেন। এজন্য তিনি পিএলও মাওলানা নামে পরিচিত ছিলেন জনসাধারণের মাঝে। তিনি স্বপ্নে দেখতে পান বারদুয়ারী মসজিদটি মাটির নিচে চাপা পরে আছে।

এরপর তিনি জামালপুর থেকে শেরপুর আসলেন এবং কয়েকদিন অবস্থান করে এলাকার প্রবীণ লোকদের নিয়ে জঙ্গলে আসেন কিন্তু জঙ্গল বড় হওয়ায় স্থানটি নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পরে। পরবর্তীতে একটি উপায় বের করলেন অর্থাৎ চোখ বন্ধ করে একটি পাথর নিক্ষেপ করলেন এবং আগেই উপস্থিত জনতাকে বললেন পাথরটি কোথায় পরে তাতে নজর রাখতে। পাথরটি পরে মসজিদের উত্তর দেওয়ালের পাশে তখন মাটি খুঁড়তে থাকেন, ১০ ফুট খননের পর উত্তর ওয়ালের সন্ধান মিলে তারপর ধাপে ধাপে পুরো মসজিদটি বের করেন, মসজিদটি মাটির নিচে চাপা থাকায় বিভিন্ন সাইড বিনষ্ট হয়ে যায় পরে স্বপ্নে দেখা নকশা অনুযায়ী নির্মাণ কাজ শুরু করা হয় (১৯৬৩) স্বপ্নে দেখা মসজিদের নকশায় ছিলো ১২ টি দরজা, তিনটি গম্বুজ পরে স্থানীয় লোকজন মসজিদের চারপাশে থাকা তাদের জমি গুলো স্বেচ্ছায় দান করে দেন মসজিদের নামে এবং মসজিদটি সংস্করণ করেন।

মসজিদ নির্মাণের জন্য দান বাক্স তৈরি করা হয় তারপর থেকে মসজিদের সকল উন্নয়ন মূলক কাজ হয়ে থাকে দান বাক্সের টাকায়। মসজিদ নির্মাণ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর মাওলানা আব্দুল আজিজ সাহেব এ দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় নেয়। তারপর তার বড় ছেলে মাওলানা ফরহাদ হোসাইন মসজিদটির দায়িত্ব গ্রহণ করেন করে আসেন। দায়িত্ব পালন অবস্থানরত অবস্থায় তিনিও এ দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে যান। মূল মসজিদটি একতলা বিশিষ্ট হলেও বর্তমানে আধুনিক স্থাপত্যকলায় ৫ তালার নির্মাণ কাজ চলছে।অপরূপ নকশা ও কারুকার্য খচিত মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে দেখতে খুবই সুদৃশ্য হবে। এখানে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক এ মসজিদটি দেখতে এবং নামাজ আদায় করতে। শুক্রবার নামে মানুষের ঢল। পুনঃনির্মনাধিন মসজিদে একত্রে প্রায় ৫ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করেতে পারবে। 

জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার গরজরিপার ইউনিয়নের বারদুয়ারী মসজিদটি অবস্থিত। আর প্রাচীন কালে গরজরিপা ছিলো শেরপুরের রাজধানী। মসজিদটির খেদমতের জন্য রয়েছেন একজন খতিব, একজন স্থানীয় ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন এবং একজন খাদেম। মসজিদটির বারোটি দরজা থাকায় এর নাম দেওয়া হয়েছে বারদুয়ারি মসজিদ। শ্রীবরদী থেকে কুরুয়া হয়ে দিকে ১২ কিলোমিটার দূরে বারদুয়ারী মসজিদ অবস্থিত, ভাড়া ৪০ টাকা অটো রিক্সা বা সিএনজি যোগে। আর শেরপুর খোয়ারপাড় থেকে কালিবাড়ী হয়ে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভাড়া ৩০ টাকা অটো রিক্সা বা সিএনজি যোগে। তাছাড়াও নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়, পুরো রাস্তা পিস ঢালাই করা।







আরও খবর


প্রকাশক: এম এন এইচ বুলু
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহফুজুর রহমান রিমন  |   উপদেষ্টা সম্পাদক : রাজু আলীম  
বিএনএস সংবাদ প্রতিদিন লি. এর পক্ষে প্রকাশক এম এন এইচ বুলু কর্তৃক ৪০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বুলু ওশেন টাওয়ার, (১০তলা), বনানী, ঢাকা ১২১৩ থেকে প্রকাশিত ও শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস, ২৩৪ ফকিরাপুল, ঢাকা থেকে মুদ্রিত।
ফোন:০২৯৮২০০১৯-২০ ফ্যাক্স: ০২-৯৮২০০১৬ ই-মেইল: spnewsdesh@gmail.com