প্রকাশ: বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫, ৭:৩৬ PM
শেরপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আলু উৎপাদনে খুশি হলেও পর্যাপ্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চাষিরা। সরকারিভাবে দুটি ও বেসরকারিভাবে একটি হিমাগার থাকলেও আলু সংরক্ষণের জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বহু কৃষক বাধ্য হয়ে কম দামে আলু বিক্রি করছেন। ফলে কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। হিমাগারে সংকুলান না হওয়ায় বাইরে আটকে আছে শত শত ট্রাক আলু বহনকারী গাড়ি। যার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ব্যহত হচ্ছে শেরপুর-শ্রীবরদী সড়কে যানচলাচল।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শেরপুরে ৫ হাজার ২১২ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু কৃষকরা আরও বেশি জমিতে আলু আবাদ করায় ৫ হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ফলে ৯৩ হাজার ৮১৬ টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এবার ফলন হয়েছে ৯৫ হাজার ৭০৬ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৮৯০ টন বেশি। জানা যায়, শেরপুরে সরকারিভাবে দুটি হিমাগার রয়েছে। যেখানে যথাক্রমে ১ হাজার ও ২ হাজার টন করে মোট ৩ হাজার টন আলু সংরক্ষণ করা সম্ভব। কিন্তু এবারের উৎপাদনের তুলনায় এটি খুবই কম। এছাড়া জেলার একমাত্র বেসরকারি হিমাগার তাজ কোল্ড স্টোরেজে ১০ হাজার টন আলু সংরক্ষণের সুযোগ থাকলেও হিমাগারে প্রচণ্ড চাপ পড়ায় কৃষকরা জায়গা পাচ্ছেন না। হিমাগারে জায়গা না পেয়ে অনেক কৃষক ট্রলি ও ট্রাকে আলুবোঝাই করে কয়েকদিন ধরে অপেক্ষা করছেন। ফলে শেরপুর জেলা শহর থেকে উপজেলা শহরগুলোর সংযোগ সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। শেরপুর-শ্রীবরদী, শেরপুর-বকশীগঞ্জ, রৌমারী-কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ, অতিরিক্ত উৎপাদনের ফলে সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় অনেকেই আলু সংরক্ষণ করতে পারছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে তারা কম দামে আলু বিক্রি করছেন, যা চাষাবাদের খরচও তুলতে পারছে না। শ্রীবরদী উপজেলার ভায়াডাঙা হাঁসধরা গ্রামের শামছুল মিয়া দুই ট্রলি আলু নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, গত তিনদিন ধরে আমি ৩শ বস্তা আলু নিয়ে এখানে এসেছি। কিন্তু আলু হিমাগারে রাখছে না। তারা বলতেছে ভেতরে জায়গা নাই। আবার কেউ কেউ বলতেছে জায়গা আছে কম। এখন আমরা কি করবো এই আলুগুলো নিয়ে। বাড়িতে নিয়ে গেলেও নষ্ট হবে।