প্রকাশ: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:১১ PM
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলার জন্য মসজিদ, সরকারি ও বেসরকারি অফিস, এবং বাসাবাড়িতে এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান ফাওজুল কবির খান।
এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট একটি টিম কাজ করবে, যারা পর্যবেক্ষণ করবে এসির ব্যবহারে কোনো ধরনের অসামঞ্জস্যতা আছে কিনা— জানিয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেছেন, এসির তাপমাত্রা নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখতে না পারলে বিদ্যুৎ বিভাগ ওই এলাকাগুলোতে লোডশেডিং কার্যকর করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের অর্থনীতি দুর্বল অবস্থায় ছিল। বিপুল অর্থ পাচার হওয়ায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য পরিশোধে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে, রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, শীতে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ৯ হাজার মেগাওয়াট, কিন্তু গ্রীষ্মে তা বেড়ে ১৭-১৮ হাজার মেগাওয়াট হয়ে যায়। এ বৃদ্ধির প্রধান কারণ সেচ ও এসির ব্যবহার। সেচ খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে, এসি ব্যবহারের পরিমাণ যদি কমানো যায়, তাহলে কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব। এছাড়া, কুলিং লোড কমাতে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মসজিদে তারাবির সময় এসি ২৫ ডিগ্রিতে ব্যবহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইভাবে, সরকারি-বেসরকারি অফিসেও এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ একটি টিম গঠন করে এসব নির্দেশনার বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করবে। কোথাও নির্দেশনা না মানলে, সেখানে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ বিচ্ছেদ করা হবে।
গ্যাস সংকট নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন কূপ খনন করা হচ্ছে। এছাড়া, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হচ্ছে, ফলে ২০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে। এলএনজি আমদানির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা রয়েছে, তবে মূল সমস্যা হচ্ছে জ্বালানির অভাব। এছাড়া, উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে। কয়লা, গ্যাস ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কেমন এবং কত দামে বিদ্যুৎ কেনা হবে, সে বিষয়ে একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করা হবে। সব মিলিয়ে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে টেকসই পর্যায়ে নিয়ে আসার লক্ষ্য রয়েছে।