প্রকাশ: রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৫:৫৫ PM
দ্বিতীয় দফায় অবৈধ অভিবাসীদের শনিবার রাতে ভারতে ফেরত পাঠিয়েছে আমেরিকা। তবে হাতকড়া-শিকল বিতর্ক এবারও পিছু ছাড়ল না।
আমেরিকা থেকে ফেরা এক অবৈধ ভারতীয় দাবি করেছেন, তাদের হাতকড়া পরিয়েই বিমানে নিয়ে আসা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের পা-ও বেঁধে রাখা ছিল শিকলে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাতের পর এই প্রথম বিমান বোঝাই করে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাল আমেরিকা। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্পের পাঠানো সামরিক বিমানে ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীদের হাতকড়া পরিয়ে, শিকলে বেঁধে নিয়ে আসা হয়েছিল। তা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। এই ভাবে কেন অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছে আমেরিকা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ভারতের সংসদেও। বিতর্কের আবহেই দু’দিনের আমেরিকা সফরে যান মোদি। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন হোয়াইট হাউসে। দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকের পর দ্বিতীয় দফার অবৈধ অভিবাসীদের কী অবস্থায় ফেরানো হয়, সে দিকে কৌতূহলী নজর ছিল বিশ্ববাসীর।
মোদি সরকারের কূটনীতি কতটা সফল হবে, তা জানতে অপেক্ষায় ছিল ভারতেরও। কংগ্রেস নেতা তথা সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম সমাজমাধ্যমে সেই কৌতূহল উস্কে দিয়ে লেখেন, এটি ভারতীয় কূটনীতির পরীক্ষা। এই কৌতূহলের মাঝেই শনিবার রাত সাড়ে ১১টার কিছু পরে আমেরিকান সামরিক বাহিনীর সি-১৭ গ্লোবমাস্টার অবতরণ করে পঞ্জাবের অমৃতসর বিমানবন্দরে। ফেরত পাঠানো হয় ১১৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে। তারা অমৃতসর বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পর প্রত্যেকের অতীত যাচাই (ব্যাকগ্রাউন্ড চেক) করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ভারতে ফেরাদের মধ্যে একটি বড় অংশ ছিলেন পঞ্জাবেরই বাসিন্দা।
রোববার ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ পুলিশের গাড়িতে করে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। হরিয়ানা সরকারও সে রাজ্যের বাসিন্দাদের ফেরানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে। তাদের কী অবস্থায় আমেরিকা থেকে ফেরানো হয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। তবে রোববার সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, দলজিৎ সিংহ নামে এক অবৈধ অভিবাসী দাবি করেছেন, তাদের হাতকড়া এবং শিকল পরিয়েই বিমানে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রথম দফায় হাতকড়া-শিকল বিতর্কের মাঝে অবশ্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তিনি সংসদে জানান, আমেরিকার নিজস্ব আইন অনুসারেই হাতকড়া-শিকল পরানো হয় অবৈধ অভিবাসীদের। তবে নারী ও শিশুদের শিকল-হতাকড়া পরানো হয়নি বলেও সেই সময় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ঘটনাচক্রে, শনিবার যে ১১৬ জন অবৈধ অভিবাসীকে ভারতে ফেরানো হয়েছে, তাদের মধ্যে দু’জন খুনের মামলায় অভিযুক্ত বলে জানিয়েছে পিটিআই। পঞ্জাবের পাতিয়ালা জেলার রাজপুরার বাসিন্দা ওই দুই তরুণের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে খুনের মামলা রুজু হয়। সন্দীপ সিংহ ওরফে সানি এবং প্রদীপ সিংহ নামে ওই দুই তরুণ অমৃতসর বিমানবন্দরে অবতরণ করতেই তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। রোককার আরও শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে নিয়ে রোববার তৃতীয় একটি বিমান আসার কথা রয়েছে ভারতে।