সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ২ মার্চ আদালতে দাখিল না করা হলে রাজপথে কর্মসূচি দিয়ে কঠোর আন্দোলনে নামবেন সাংবাদিকরা। পাশাপাশি আগামীকাল বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের একটি দল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে তাকে স্মারকলিপি প্রদান করবে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানী সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতি আবু সালেহ আকন তার বক্তব্যে এ কথা জানান। আবু সালেহ বলেন, গত ১৩ বছরেও এই হত্যার বিচার হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার যে ফ্যাসিস্ট ছিল তার প্রমাণ হচ্ছে, এই হত্যার বিচারকে তারা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করেছে মন্তব্য করে ডিআরইউ সভাপতি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত ছিল। তার প্রমাণ হচ্ছে, আমরা এখনো খুনিদের নাম জানতে পারি নাই। সেই সময় শেষ হয়েছে, এখন আওয়ামী লীগ নেই। এখন বিপ্লবী সরকার ক্ষমতায়। আমরা তাদের কাছে আশা করছি, এই হত্যার বিচার পাব। যদি না পাই আপনারা মনে রাখবেন, কেয়ামত পর্যন্ত এই হত্যার বিচার দাবি করে যাব আমরা।
ডিআরইউ সভাপতি বলেন, এখানে আমরা যারা আছি সবাই সাগর-রুনি হত্যার বিচার চাই। আগামী নতুন কমিটিতে যারা আসবেন তারাও আশা করি এই হত্যার বিচার চাইবেন । এই বিপ্লবী সরকার এই ঘটনার বিচার না করলে আমরা কেয়ামত পর্যন্ত বিচার দাবি করেই যাব।
আবু সালেহ বলেন, একটি কথা মনে রাখবেন আমরা যারা এখানে আছি সকলে সাগর রুনি হত্যার বিচার চাই। আগামী আন্দোলন কর্মসূচিতে যারা আসবেন সাগর রুনি হত্যার বিচারের দাবিতেই আসবেন। ইতোপূর্বে যারা আমাদের আন্দোলন সংগ্রামকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেছেন, ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন, যারা বেনিফিসিয়ারী হয়েছেন, পকেটে টাকা ভরেছেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে গিয়েছেন, বিদেশ গিয়ে আলিশান আলিশান অবস্থানে থেকেছেন, তাদেরও বিচারের মুখোমুখি করবে এই সাংবাদিক সমাজ।
এই সাংবাদিক নেতা বলেন, আজকের সমাবেশ থেকে সংগ্রাম পরিষদ গঠনের কথা এসেছে। আমরা জেনেছি আগামী ২ মার্চ এই হত্যার প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে। আমরা ২ মার্চ পর্যন্ত দেখব। যদি ২ মার্চ এই হত্যার প্রতিবেদন দাখিল করা না হয়, তাহলে আমরা সংগ্রাম কমিটি গঠন করে রাস্তায় নামব এবং জোরালোভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব। এছাড়া এই হত্যার বিচার দাবিতে আগামীকাল বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে।
এর আগে, সমাবেশে সিনিয়র সাংবাদিকরা বলেন, আমরা আগামী বছরের এই দিনে বিচারের দাবি আর করতে চাই না। অতি দ্রুত আমাদের এই দাবি বাস্তবায়ন করুন। আমরা আরও দাবি করছি, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দিনটি সাংবাদিক সুরক্ষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট শহিদুল ইসলাম, ইউনিয়নের সেক্রেটারি খোরশেদ আলম, ডিআরইউ এর প্রথম কমিটির সাবেক সেক্রেটারি মনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাবেক সেক্রেটারি রাজু আহমেদ, সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন। সমাবেশ আরও বক্তব্য রাখেন ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কুদরত-ই-খুদা, রাশেদ আহমেদ, স্থায়ী সদস্য গাজী আনোয়ার, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুশান্ত সাহা, ডিইউজে প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার প্রমুখ।