প্রকাশ: শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭:৫৭ PM
উত্তরা পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশে গড়ে ওঠা ফটোকপি ও কম্পিউটার প্রিন্টের দোকান ঘিরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র (শ্বেত অপরাধী) ভুয়া প্রমাণপত্র ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি ও বিতরণের মত দেশ বিরোধী অপরাধ মূলক কাজ পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের সূত্র ধরে সরোজমিনে উত্তরা পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, পরিচয় গোপন করতে যতো প্রকার ভুয়া প্রমাণপত্র দরকার তার সবই ব্যাঙের ছাতার মত গজে ওঠা কম্পিউটার কম্পোজ ও ফটো কপির দোকান গুলোতে করা হচ্ছে। এছাড়াও দোকান গুলোতে রয়েছে আলাদা আলাদা প্রতিনিধি, যাদের কাজ পাসপোর্ট অফিসে আগত পাসপোর্ট প্রার্থীদের কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়া অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে দ্রুত পাসপোর্ট হাতে তুলে দেয়ার মত মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে গ্রাম থেকে আগত অতি সাধারণ ও সরল মানুষ গুলোর সর্বস্ব কেড়ে নেয়া।
পাসপোর্ট অফিসে আসা এক পাসপোর্ট প্রত্যাশি জেরিন চৌধুরী বলেন, "বর্তমান ঠিকানা ও পেশা সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র হিসেবে বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করেছি তবে শিক্ষার্থী প্রমাণের প্রমাণপত্র আনিনি। তাই আমার আবেদন পাসপোর্ট অফিস কতৃপক্ষ গ্রহণ করেনি। পরবর্তীতে আর এন নামের এক কম্পিউটার কম্পোজ ও ফটোকপির দোকান থেকে কলেজের ভুয়া আইডি কার্ড তৈরি করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিয়েছি"। জেরিন চৌধুরীর কথার সূত্র ধরে আর এন কম্পিউটার কম্পোজ ও ফটোকপির দোকানে কর্মরত এক প্রতিনিধির সাথে পাসপোর্ট তৈরির বিষয়ে কথা বলে জানা যায় ১০ বছরের ৪৮ পৃষ্ঠা এম আরপি পাসপোর্টের জন্য বর্তমান ঠিকানার পুলিশ ভেরিফিকেশন সহ খরচ হবে ১৫ হাজার টাকা। আর সময় লাগবে ১৫ দিন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পাসপোর্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশ এই ধরনের অপরাধ আরও সহজতর করছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, পাসপোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথির ক্ষেত্রে এমন অপরাধ দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই অপরাধ দমনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ঐ বিশেষজ্ঞ। শ্বেত অপরাধী সংশ্লিষ্ট বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, "এই চক্রের সদস্যরা অত্যন্ত সংগঠিত এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে নথি জাল করে থাকে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যেই এই চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করছে এবং অপরাধের সাথে জড়িত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষকেও ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে সচেতন থাকাতে হবে নতুবা এধরনের অপরাধ নির্মূল করা সহজ হবে না।