ভূঞাপুর প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদী খননের নামে চরের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি ও জমির ফসল কাটা হচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহণ না করে খননকাজ পরিচালনা করায় দেখা দিয়েছে জটিলতা। ভূমি মালিকরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে উচ্চ আদালতে গেলে উচ্চ আদালত খননকাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে অনড় অবস্থানে রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত নদী খনন শেষ করতে বাংলা ড্রেজার বসিয়েছে বলে জানিয়েছে ড্রেজার পরিচালনাকারীরা। আর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন ইতোপূর্বে নদী খননকাজে ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের প্রয়োজন পড়েনি। সম্প্রতি উপজেলা ভূমি অফিসের প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেওয়া হয়েছে তাতেও উল্লেখ করা হয়েছে যে চরের জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন। যমুনা নদী খননে ব্যবহার করা হচ্ছে শত শত অবৈধ ‘বাংলা ড্রেজার’। আর সেই খননের বালু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নৌকাযোগে পূর্বপাড়ে নিয়ে তা ট্রাকে করে বিক্রি করছে। নদী খননে ভূমি অধিগ্রহণ বা ভূমি মালিকদের পাওনা পরিশোধ না করায় ক্ষোভ চরাঞ্চলের মানুষজনের। সরেজমিনে উপজেলার অর্জুনা ও গাবসারা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, যমুনা নদী খননে শত শত ‘বাংলা ড্রেজার মেশিন’ বসানো হয়েছে। সেই মেশিন দিয়ে দিনরাত জেগে উঠা চর ও আবাদি জমি কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে কৃষকের ধান, গমসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। বালু স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নৌকাযোগে পূর্বে পাড়ে এসে তা বিক্রি করছে। জানা গেছে, প্রায় ২০৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে যমুনা নদী খননের কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রায় সাড়ে ৯ কিলোমিটার খননকাজ চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ২১ শতাংশ।
অয়েল ট্যাংকারের চালকের গাফিলতি ও অদক্ষতাই দায়ী ভূগর্ভস্থ বা নদীর তলদেশ হইতে বালু বা মাটি উত্তোলন সংক্রান্ত বিশেষ বিধানের ৫ এর (১), (২) ও (৩) আইনে বলা হয়েছে, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না। (২) নদীর তলদেশ হইতে বালু বা মাটি উত্তোলনের ক্ষেত্রে যথাযথ ঢাল সংরক্ষণ সাপেক্ষে, সুইং করিয়া নদীর তলদেশ সুষম স্তরে খনন করা যায় এইরূপ ড্রেজার ব্যবহারকরতঃ বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা করিতে হইবে। (৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন ড্রেজিং কার্যক্রমে বাল্কহেড বা প্রচলিত বলগেট ড্রেজার ব্যবহার করা যাইবে না। কৃষক ইয়াকুব বলেন, বাপ-দাদার ২২ বিঘা জমি নদী খননের প্রকল্পে চলে গেছে। অথচ এই জমির ফসল দিয়েই আমাদের সংসার চলে। এই জমির খাজনা খারিজ সব আমাদের নামে রয়েছে।