মেহেরপুর গাংনী উপজেলার শানঘাাট গ্রামে পৈতৃক সম্পত্তি ভাগাভাগি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ছোট ভাইয়ের হাতে বোন জোসনা খাতুন ও ভাবি স্কুল শিক্ষিকা জাকিউল ইলমা নামের দুই নারীকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১ টার সময় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সানঘাট গ্রামের দাড়েরপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, সানঘাট গ্রামের জাহিদ হোসেনের স্ত্রী ও গাংনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা জাকিউল ইলমা (৪৫) ও চুয়াডাঙ্গার বোয়ালিয়া গ্রামের হাফিজুল ইসলামের স্ত্রী জোছনা খাতুন (৫৫)। এঘটনায় আহত হয়েছেন নিহত জাকিউল ইলমার স্বামী জাহিদ হোসেন ও অন্যবোন শামীমা আক্তার।
আহতরা কুস্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত জাকিউল ইলমা ঘাতক অহিদ ইসলাম ওরফে মহিবুল মেজ ভাইয়ের স্ত্রী ও জোছনা খাতুন তার বড় বোন।
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বড় ভাই মহিবুল ইসলাম অহিদ রামদা দিয়ে কুপিয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাবার সময় মেহেরপুর সদরের আমঝুপি বাজার থেকে আটক করা হয়েছে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম হত্যা ও আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত জোসনার চাচাত ভাই টোকন জানান, পৈতৃিক সম্পত্তি নিয়ে ভাই বোনদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ মামলা মোকদ্দমা চলে আসছিলো। আজ সকালে নিহত জোছনা খাতুন অপর বোন শামীমা খাতুন পিতার ১ একর ২৭ শতক জমির পুকুরে মাছ ছাড়তে এসেছিলেন। সকালে সবাই মিলে বাড়িতে মিমাংসায় বসেছিলেন। মিমাংসার এক পর্যায় বোন ছোট ভাই জাহিদ ও তার স্ত্রী জাকিউল ইলমা পুকুরে মাছ ছাড়তে যান। এসময় মহিবুল ইসলাম ওহিদ ধারাল রামদা দিয়ে একের পর এক কোপাতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান বোন জোছনা খাতুন ও ভাইয়ের স্ত্রী জাকিউল ইলমা। ঘাতক মহিবুল ইসলাম ওহিদ সানঘাট পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম, গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে নেয়া হয়।
হত্যার ঘটনা ঘটানোর পর ঘাতক মহিবুল ইসলাম অহিদ পালিয়ে যাচ্ছিল। অভিযান চালিয়ে মেহেরপুর সদরের আমঝুপি বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। মহিবুল ইসলাম অহিদ আহত হওয়ায় তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম বলেন, দুই নারীকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পৈত্তিক সম্পত্তি ভাগবন্টন নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি।