বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বার্তা আদান-প্রদানের বহুল পরিচিত মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ‘আলো আসবেই’ নামক গ্রুপটির ফাঁস হওয়া স্ক্রিনশট নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা করছেন শোবিজ ও সংগীত তারকারা। স্ক্রিনশটগুলো ফাঁস হওয়ার পর অনেক অভিনয়শিল্পীদেরই কালো চেহারা ফুটে উঠেছে স্পষ্টভাবে।
স্ক্রিনশটগুলোয় দেখা গেছে, সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, রিয়াজ আহমেদ ও সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের নেতৃত্বে আওয়ামীপন্থী শিল্পীরা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। একইসঙ্গে আন্দোলন দমাতে গোপনে বিভিন্ন পরামর্শও দিচ্ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এখন ধীরে ধীরে সব প্রকাশ্যে উঠে আসছে। এ অবস্থায় অভিনেত্রী মনিরা মিঠু জানান―আলো আসবেই গ্রুপের মতো আরও একটি গ্রুপ রয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন মনিরা মিঠু। স্ট্যাটাসে অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকিকে অভিযুক্ত করে মনিরা মিঠু জানান, শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক নাজনীন হাসান চুমকির নাকি সারারাত ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল যে, কীভাবে অশ্লীল ভিডিও আপলোড করলেন মনিরা মিঠু। কারণ, ভিডিওর এক জায়গায় ড. এজাজ কমলা খাচ্ছিলেন আর ‘বিচি’ শব্দ উচ্চারণ করেছিলেন।
অভিনেত্রী মনিরা মিঠু লেখেন, ‘অ্যাক্টর ইকুইটির সেই গোপন গ্রুপের এক সদস্য আমাকে কিছু স্ক্রিনশট পাঠান, আমি যেন দ্রুত ভিডিওটি ডিলিট করি। স্ক্রিনশটে দেখি সুজাত শিমুল আমাকে তুমুল গালাগাল করছেন। আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে, শিল্পী সংঘের কোনো সিনিয়র সদস্য সুজাত শিমুলকে বলেননি যে, একটি ভিডিওর জন্য মিঠু আপাকে এইভাবে গালাগাল করছো কেন? নাজনীন হাসান চুমকি তো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারতেন যে, মিঠু আপা ভিডিওটি শ্রুতিমধুর না, মুছে ফেলেন। কারণ তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের বিবাদ ছিল না।’
তার এমন অভিযোগের পর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকি। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে ফেসবুক ভেরিফায়েড প্রোফাইলে এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘থিয়েটার, ধারাবাহিক নাটক, ক্লাব ৯২-৯৪, পাঠচক্র, অফিস, বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদির ন্যায় অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশের কমিটির সদস্যদের নিয়ে মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল এবং আছে। খুব স্বাভাবিক, থাকে এবং থাকবেই। সেটাকে কিনা ‘আলো আসবেই’-এর সঙ্গে তুলনা করলেন স্বনামধন্য ও শ্রদ্ধেয় মুনিরা মিঠু আপা।’
নাজনীন হাসান চুমকি লিখেছেন, ‘সেখানকার কথোপকথন এই কমিটির একজন সদস্য তাকে স্ক্রিনশট পাঠাল (শুধু আমার এবং সুজাত শিমুল ভাইয়ের)। সেটার ভিত্তিতে তিনি আজ যে বিশাল স্ট্যাটাস দিলেন, সেই স্ট্যাটাসকে আবার নিউজ করল কিছু নিউজপেপার। সব নিউজপেপারগুলো একবারও আমার বা সুজাত শিমুলের সঙ্গে কথা বলারও প্রয়োজন মনে করল না। এটা খুবই দুঃখজনক।’
‘যাইহোক, গত ১০ মে ২০২৪, বেলা ১০টা ২৫ মিনিটে অর্থাৎ চারমাস আগে মিঠু আপা বারবার আমাকে নক করে এই একই বিষয় নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অনেক কথা বলেছিলেন, লিখেছিলেন এবং ভয়েস টেক্সটও পাঠিয়েছিলেন। দু’জন সহকর্মীর ভুল বোঝাবুঝির অবসান ও সুসম্পর্ক পুনঃবহাল হয়েছিল। কিন্তু আজ এই স্ট্যাটাস ও নিউজগুলো পড়ার পর সেইসব কথোপকথনের স্ক্রিনশট ও ভয়েজ মেসেজ (আমার কাছে এখনও সযতনে আছে) প্রকাশ করে দিলে কার সম্মান বাড়বে, সেটাই ভাবছি।’ এদিকে নাজনীন হাসান চুমকির এমন পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাল্টা জবাব দিয়েছেন মনিরা মিঠু। এ অভিনেত্রী বলেছেন, স্ক্রিনশট ও ভয়েজ মেসেজগুলো প্রকাশ করতে পারেন চুমকি। এতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই আমার।