প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩, ৭:১৯ PM
১২ নভেম্বর সোমবার দুপুর ১টায় জেনেভা জাতিসংঘ দপ্তরের নীচতলার XXII নং রুমে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সাইড ইভেন্ট Human Rights Situation of Bangladesh @ UPR 4th cycle. উক্ত সাইড ইভেন্টে প্যানেল স্পীকার হিসেবে যোগ দিতে আসা বাংলাদেশের আদালতে সাজাপ্রাপ্ত মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান ( শুভ্র) বিভিন্ন অসত্য বক্তব্য উপস্থাপনার জন্য সচেতন দর্শক ও সিভিল সোসাইটি কর্তৃক তোপের মুখে পড়েন এবং কিছুটা লাঞ্ছিত হন। প্রতি চারবৎসর পর UPR 4 th Cycle এই বিশেষ মানবাধিকার সম্মেলনের মূল অধিবেশনে সকাল থেকে বাংলাদেশের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি ও তাঁর নেতৃত্বে একটি উঁচ্চ পদস্থ কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি , আইনের শাসন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করেন । অধিবেশনে ১১১ টি দেশের কূটনৈতিক গন আলোচনায় অংশগ্রহন করেন এবং সেখানে কানাডা ও স্লোভাকিয়া ব্যাতিত ৯০ টি দেশ বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে সন্তোস প্রকাশ করেন । দুপুর ১ টায় মূল অধিবেশন শেষ হওয়ার পর নীচ তলার XXII নং রুমে ক্যাপিটাল পানিসম্যান্ট জাস্টিস প্রোটেক্ট নামে একটি সংগঠেনের ব্যানারে মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান নামের একজন প্রবাসী বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে সাইড ইভেন্ট আয়োজন করে । যেখানে আদালত কতৃক নিষিদ্ধ সংগঠন অধিকারের নেতা আদিলুর রহমান খানকে সম্পৃক্ত করে ।
অন্যান্য আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল স্পীকারদের পাশে বসে আদিলুর রহমান খান দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে একের পর এক অসত্য ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করে বাংলাদেশের বর্তমান আইনের শাসন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেন। প্রশ্নোত্তর পর্বে বাংলাদেশ অভিবাসী সোসাইটির পক্ষে মন্তব্য ও প্রশ্ন রাখেন জমাদার নজরুল ইসলাম, শ্যামল খান, খলিলুর রহমান মামুন ও সসীম গৌরিচরণ এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে যুক্তি প্রমান রাখেন জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি মিসেস সঞ্চিতা হক। ইন্ট্যান্যাশনাল ফোরাম ফর সেক্যুলার বাংলাদেশের সুইস শাখার সভাপতি রহমান খলিলুর মামুন অসত্য তথ্যের প্রতিবাদ করে বলেন, জনাব আদিলুর রহমান খান একজন বিএনপি জামাত পৃষ্ঠপোষক । তিনি মানবাধিকারের নামে হেফাজত ইসলামের শাপলাচত্বরের ভায়োলেন্স কে উস্কানি দিয়েছেন সর্বমোট ৮ জন মৃতের নামের পরিবর্তে সরকার কে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে ৬১ জন মৃত লিখে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনে রিপোর্ট পেশ করেন। জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি মিসেস সঞ্চিতা হক প্যানেলিস্ট গনের বিভিন্ন ব্যাখ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন এবং বর্তমান সরকারের সার্বজনীন মানবাধিকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘ ব্যাখ্যা প্রদান করেন , যা উপস্থিত সুধী মহলে ভীষন প্রসংসিত হয় । এসময় তিনি বলেন আদিলুর রহমান খান জামাত- বিএনপি সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। আদিলুর রহমান খান বাংলাদেশের নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হন, উচ্চ আদালতে জামিন নিয়ে এখন তিনি জেনেভা জাতিসংঘে আমাদের সামনেই অবস্থান করছেন । বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কারনে তিনি আজ এখানে কথা বলতে পারছেন। এ সময় শ্যামল খান ফ্লোর চাইলে সত্য উন্মোচনের ভয়ে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মডারেটর মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ফ্লোর বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃনা জানিয়ে জমাদার নজরুল ইসলাম আদিলুর রহমান খান কে একজন সুবিধাবাদি মানবাধিকার ব্যবসায়ী হিসেবে আখ্যা দেন এবং আদিলুর রহমান খানের প্রকৃত চরিত্র জানতে বাংলাদেশে তদন্ত করার আহ্বান জানান আন্তর্জাতিক মহলকে।
অধিকার কে আদিলুর রহমানের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান হিসাবে উল্লেখ করে শ্যামল খান বলেন এই প্রতিষ্ঠানের কাজ হচ্ছে জামাত বিএনপি সহ স্বাধীনতা বিরোধীদের পক্ষ হয়ে কাজ করা। অপপ্রচার ও বিভিন্ন কুৎসা রটানোর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহ দিয়ে থাকে আদিলুর রহমানের এই অধিকার নামক সংগঠন। তিনি ও তার এই সংগঠন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন। আদিলুর রহমানকে জাতিসংঘে মিথ্যাচার করার আর সুযোগ না দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের কাছে অনুরোধ রাখেন শ্যামল খান।
সকলের প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পেরে আদিলুর রহমান বিব্রত বোধ করেন। এসময় অডিয়েন্স উত্তপ্ত হয়ে গেলে তোপের মুখথেকে বাঁচতে আদিলুর রহমান খান প্যানেল মঞ্চ থেকে তড়িঘড়ি করে নেমে সটকে পরেন।
ফাতেমা রহমান রুমা
জেনেভা