প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৩:৩০ PM
গাজীপুরের শ্রীপুরে জমির বিরোধ নিয়ে সালিসে দুপক্ষের সংঘর্ষে দুই বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও চারজন গুরুতর আহত হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের হয়দেবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু ফাতেহা খাতুন (২) উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের হয়দেবপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে। আহতরা হলেন কুলসুম (২২), ছাত্তার (৩৬), মুক্তার (২৭) ও ইতি (২০)। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, ‘খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের কয়েকটি টিম পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
নিহতের চাচা মোক্তার হোসেন সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী লাল মিয়ার সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। কিছুদিন পূর্বে প্রতিপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদে নালিশ করে। এর ধারাবাহিকতায় ইউপি চেয়ারম্যান কয়েকজন ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দিয়ে গ্রাম্য সালিস বসে। সালিস শুরুর একপর্যায়ে জমির কাগজপত্র দেখা শুরু করে। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে আমাদের তর্ক হয়। এর একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন দা-লাঠি এনে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। তখন নিহত শিশুর বাবা আব্দুস সাত্তারকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। সে নিজেকে রক্ষায় দৌড়ে বসতঘরে আশ্রয় নিতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন ঘরে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় আব্দুস সাত্তারের ছোট্ট শিশুটি বাবার কাছে আসলে হামলাকারীদের আঘাতে শিশুটি গুরুতর জখম হয়। তখন প্রতিপক্ষের লোকজন আমার ভাই, ভাবিসহ কয়েকজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।’
হামলায় প্রতিপক্ষের ফরহাদ (৩২), আব্দুর রশিদ (৫০), হুমায়ুন (৩০), খোরশেদ (৪৫), জাকির হোসেন (২০), আকাশ (২০), মেহেদী হাসান (১৮), ইসলাম উদ্দিন (৭০), লাল মিয়া (৭৫) ও তুতু মিয়া (৪৫) জড়িত।
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সামাদ সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করার বিষয় নিয়ে গ্রাম্য সালিসে বসি। জমির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই চলছিল। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠে। তখন আমরা উভয় পক্ষকে থামিয়ে দেই। এর কিছুক্ষণ পরই প্রতিপক্ষ লাল মিয়ার নেতৃত্বে দা লাঠি নিয়ে পুনরায় হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘরের ভেতর গিয়ে মারধরের একপর্যায়ে শিশুর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। এরপর শিশুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।’ শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাবিনা আক্তার সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, ‘শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যায়। মারা যাওয়ার পরপরই পুলিশে খবর দেওয়া হয়।