টানা বৃষ্টি ও উজানের ভারী ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে ভাটির এলাকাগুলো। পানির চাপে ডালিয়া ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। সকাল ৯টাতে বিপৎসীমার ৭ সেমি ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চলে ইতোমধ্যে পানি ঢুকে গেছে। চরাঞ্চলেও পানিতে ডুবেছে বাড়িঘর ও রাস্তা ঘাট।
এদিকে, তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ,কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে অর্ধলাখ মানুষ ইতোমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে চলাচলের রাস্তা।
পশুপাখি নিয়ে বন্যার্তরা উঁচু স্থানে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। অনেকেই উঁচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে রান্নার কাজ করছেন। গতকাল থেকে পানি তোড় আসায় নতুন নতুন এলাকায় এখনো পানি প্রবেশ করছে। নলকুপ, টয়লেটে পানি ওঠায় বিশুদ্ধ পানি সংকট ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়ছেন তারা। গোবর্ধন এলাকার গোলাম রব্বানি মিরু বলেন, কাল সকাল থেকেই পানি বাড়ছে, বাড়িঘর ডুবে যাচ্ছে। আজকেও পানি বেড়েই চলেছে। কিছু রাস্তায় পানি ছুঁইঝুঁই। অনেকটা বিপদে পরে আছি। আউয়াল মিয়া বলেন, সকাল থেকেই পানি হাঁটু সমান তাই খাটের ওপর চুলা তুলে রান্না বান্না কাজ করতে হচ্ছে। গরু-ছাগল বাঁধে নিয়ে গিয়ে রাখছি। কোনোরকমে খাটের ওপরে উঠে থাকতে হচ্ছে। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। উজান থেকে ভারী ঢল আসায় পানি বৃদ্ধি হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখছি।