দেশব্যাপী বাড়ছে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। বড়দের পাশাপাশি বাচ্চারাও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। এ রোগের বড় সমস্যা হলো প্লাটিলেট কমে যাওয়া। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কারও কারও খুব দ্রুত প্লাটিলেট কমে যায়। এ অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। এ ছাড়াও ডেঙ্গু রোগ থেকে সেরে ওঠার পর স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগে। এই সময়টায় সাবধানের সঙ্গে নিয়ম মেনে চলা উচিত।
প্রথমবারের ধাক্কা সামলে উঠলেই যে মুক্তি তা কিন্তু নয়। ডেঙ্গু রোগে কেউ দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে তা প্রথমবারের চেয়েও মারাত্মক হতে পারে। এ ছাড়াও যারা সুস্থ হচ্ছেন তাদের কিছু বিষয়ে সর্তক থাকাটা খুব দরকার। ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠার পরেও হালকা জ্বর, গাঁটে গাঁটে ব্যথা ছাড়াও পেশিতে, মাথায়, চোখের পেছনে ব্যথা থেকে যেতে পারে।
ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হওয়ার পর যে সর্তকতাগুলো অবলম্বন করবেন-
* বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। বাড়ির চারপাশে বৃষ্টির পানি জমতে দেওয়া যাবে না। টব, বাতিল টায়ার, পাস্টিকের বোতল ইত্যাদির ভেতর পানি জমে মশা বংশ বিস্তার করতে পারে। তাই এগুলো ফেলে দিন।
* আলমারির পেছন, খাটের নিচে, ঘরের অন্ধকার কোণগুলোতে মশা বিশ্রাম নেয়। এই জায়গাগুলোকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। সুস্থ হওয়ার পর বেশি পরিশ্রমের কাজ করতে যাবেন না। বিশ্রাম নেওয়া খুব দরকার। সময় মতো ঘুমাতে চেষ্টা করুন। কর্মক্ষেত্রে যোগ না দিয়ে কিছুদিন শুধু বিশ্রাম নিন।
* প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন। সারাদিনে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করুন। ধূমপান, মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন। এতে আপনার শরীর আরও দুর্বল হয়ে যাবে
* খাবারের মধ্যে টক জাতীয় ফল যেমন লেবু, বেদানা, আমলকী, আমড়া অবশ্যই খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এ ছাড়াও গমের রুটির বদলে জবের রুটি যদি খেতে পারেন খুব ভালো।
* এ সময়টাতে শরীর দুর্বল থাকে বলেই ডাবের পানি পান করতে পারেন। সারা সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ডাবের পানি অবশ্যই পান করবেন। এটি পথ্য হিসাবে কাজ করবে। পাশপাশি বিভিন্ন মৌসুমী ফলের জুস পান করার চেষ্টা করুন।
* তুলসী পাতা এবং মধু পানিতে গরম করে ফুটিয়ে সেই পানি খালি পেটে পান করবেন। দারুন কাজ দেবে। এ ছাড়া পেঁপে পাতার রস এই রোগে দারুণ উপকারী। পেঁপে পাতা বেটে সেই রস পান করলে ভালো উপকার পাবেন। এর সঙ্গে জোষ্ঠি মধু খেয়ে নেবেন। আর প্রতিদিন একটি করে লবঙ্গ চিবিয়ে খাবেন।
* ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠার পর পুনরায় জ্বর হলে অবহেলা করবেন না। চিকিৎসকের শরাণাপন্ন হন। তিনিই রোগ নির্ণয় করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন।
* দিনে-রাতে যখনই ঘুমাবেন তখন অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমাবেন। একদম সকালে ও সন্ধ্যার সময়টাতে বেশি সংখ্যক মশা ঘরে প্রবেশ করে। এই সময়টায় দরজা-জানলা বন্ধ রাখুন।